বছিলায় চেয়ার-টেবিল বসিয়ে অফিস করলেন মেয়র আতিক

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলার লাউতলা খালের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং খাল খননের সময় চেয়ার-টেবিল বসিয়ে অফিস করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। সোমবার (২৪ জানুয়ারি) দ্বিতীয় দিনের মতো অভিযান পরিচালনাকালে এভাবে অফিস করেন তিনি।

মেয়র উচ্ছেদ অভিযান সরাসরি তদারকি করছিলেন। তবে নগর ভবনে যাতে অন্যান্য কাজের ফাইল আটকে না যায়, সে জন্য তিনি লাউতলায় চেয়ার-টেবিল পেতে ভ্রাম্যমাণ অফিস করেন।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সচিব দফতর সূত্র জানায়, অভিযানের কারণে গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি দাফতরিক কার্যক্রম যাতে থেমে না থাকে, সে জন্যই মেয়র ভ্রাম্যমাণ অফিস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বেশ কিছু জরুরি ফাইল ও নথিতে সই করেন।

রবিবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল ১১টা থেকে ওই খালে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে ডিএনসিসি। অভিযানে অর্ধশতাধিক ছোট-বড় ভবন ভেঙে দেওয়া হয়। আজ সোমবার বেলা ১১টায় ফের অভিযান শুরু হয়। অভিযানের শুরুর আগে নিজ হাতে খালের সীমানার দুই পাশে খুঁটিতে লাল পতাকার টানান মেয়র। বেলা ৩টায় লাউতলায় অবস্থান করছিলেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।

বেলা ১১টায় উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরুর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডিএনসিসি মেয়র। তিনি বলেন, ‘খালটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ যা থাকার কথা বাস্তবে তার কিছুই নেই, অবৈধভাবে দখল ও স্থাপনা নির্মাণ করে খালটির অস্তিত্ব‌ই বিলীন করে দেওয়া হয়েছে। তাই প্রায় আড়াই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট খালটিকে উদ্ধার করে বুড়িগঙ্গা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে। এ জন্য কোনও অবৈধ দখলদারকে বৈধ নোটিশ দেওয়া হবে না।’

মেয়র বলেন, ‘বছিলায় শিশু-কিশোরদের খেলাধুলার মাঠ নেই। আনন্দ-বিনোদনের জায়গাও নেই। সবাই বসিলা কবরস্থানের খালি জায়গায় বেড়াতে যায়। এটাতো বেড়ানোর জায়গা না। তাই স্থানীয়দের জন্য এই খাল খনন করা হচ্ছে। খালের একপাশ ঘিরে পার্ক করা হবে। মানুষের হাঁটাচলার পথ তৈরি করা হবে।’

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। নগরীকে জলজট কিংবা জলাবদ্ধতার কবল থেকে মুক্ত করতে হলে যেকোনও মূল্যে খালগুলো উদ্ধার করতেই হবে। এখন বিভিন্ন জায়গায় খাল উদ্ধার ও পরিষ্কার কার্যক্রম চলছে।’

দুপুর দেড়টার দিকে বছিলার লাউতলার একটি মার্কেটের বারান্দায় ছোট একটি টেবিল ও তিনটি চেয়ার নিয়ে বসেন আতিকুল ইসলাম। পাশে বসেন করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা। তাদের পেছনে ব্যানারে লেখা ‘ভ্রাম্যমাণ অফিস, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন’। একপর্যায়ে মেয়র টেবিলে রাখা কিছু ফাইল যাচাই করে স্বাক্ষর করেন। তখন পাশেই লাউতলা খালের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের কার্যক্রম চলছে।

বসিলায় ভ্রাম্যমাণ অফিস করার বিষয়ে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘নিজে উপস্থিত থেকে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছি। কারণ, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে খাল খনন করা চ্যালেঞ্জের কাজ। তবে এ সময় যাতে নগর ভবনে অন্যান্য কাজের ফাইল আটকে না যায়, সে জন্য এই ভ্রাম্যমাণ অফিসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডিএনসিসির সংশ্লিষ্টরা জরুরি ফাইল নিয়ে বসিলায় এলেই তাতে স্বাক্ষর করে দিচ্ছি।’

মেয়রের এই ভ্রাম্যমাণ অফিস কার্যক্রম এবং উচ্ছেদ অভিযান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ফেসবুক পেজে লাইভ করছে সংস্থাটির জনসংযোগ বিভাগ।