বাংলাদেশ ব্যাংকের চার কর্মকর্তাকে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ

আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারের প্রায় তিন হাজার কোটি আত্মসাৎ ও পাচারের ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের চার কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল থেকে সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই চার কর্মকর্তা হলেন—যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ ফেরদৌস কবির, এবিএম মোবারক হোসেন, উপ-পরিচালক মো. হামিদুল আলম ও সহকারী পরিচালক মো. কাদের।

দুদক সংশ্লিষ্ট সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি এই চার জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চিঠি পাঠিয়েছিল দুদক।

দুদক সূত্র জানায়, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও পাচারের অভিযোগে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে দুদক। সেই মামলার তদন্তে এখন পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের তথ্য পেয়েছে তদন্ত সংস্থা।

তবে মামলা দায়েরের আগেই পি কে হালদার পালিয়ে কানাডা চলে যান। পালিয়ে যাওয়ার আগে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন তিনি। একই সময়ে তিনি চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান—ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (আইএলএফএসএল), পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি) নিজের নিয়ন্ত্রণে ধরে রাখেন। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা তুলে আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচার করেন তিনি।

পি কে হালদারের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে তার ৬২ জন সহযোগীর খোঁজ পায় দুদক। সহযোগীদের মধ্যে অন্তত এক ডজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, পি কে হালদার তার নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান থেকে নামসর্বস্ব যে প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ ও পাচার করেছেন সেগুলোর বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মনিটরিং ও অডিট প্রতিবেদনে কী ছিল তা জানতে চেয়েছেন দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তারা। তবে জিজ্ঞাসাবাদে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা নিজেদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছেন।

দুদক সূত্র জানায়, এই ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের আরও কয়েকজন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।