ঈদের ফিরতি যাত্রা

গাজীপুরে স্বস্তি, মহাখালীতে ভোগান্তি

ঈদ শেষে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে যারা সড়ক পথে রাজধানী ফিরেছেন তাদের এবারের যাত্রা অনেকটাই ছিল স্বস্তিদায়ক। আগে ঈদযাত্রায় যানজটে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হতো, এবার দেখা গেছে উল্টো চিত্র। গাজীপুরে ঈদের আগে নতুন নির্মিত ফ্লাইওভার খুলে দেওয়ায় যানজট কমেছে অনেকটা।  ঈদের ফিরতি যাত্রায় দূরপাল্লার বাসে করে রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনালে যারা এসেছেন তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। তবে মহাখালী টার্মিনালে নেমে বাসায় পৌঁছাতে অনেকেই যানবাহন পেতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বলে জানান।

শনিবার (৭ মে) রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, বাসগুলো টার্মিনালে পৌঁছার আগেই সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যাত্রী নামিয়ে ফিরছে। ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল, রাজশাহী, নওগাঁ, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন গন্তব্যের বাস চলাচল করে এই রুটে। যাত্রী, চালক এবং হেলপার সবারই স্বস্তি যানজটে অপেক্ষা করতে না হওয়ায়। এছাড়া যাত্রী চাপও ছিল মোটামুটি। বাড়তি ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে ছিল অনেকের অভিযোগ। মহাখালী বাস টার্মিনালে নেমে যারা বিভিন্ন গন্তব্যে যাওবার জন্য সিএনজি খুঁজছিলেন তাদের পোহাতে হয় আরেক ভোগান্তি। চাওয়া হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। বাস থেকে নামার পর সিএনজির জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে দীর্ঘ সময়।

টার্মিনাল এলাকা ঘুরে আরও দেখা গেছে, সিএনজিচালিত অটোরিকশাগুলো বাস টার্মিনালের সামনের রাস্তায় যাত্রী নামালেই দিতে হচ্ছে ১০ টাকা। প্রতিটি সিএনজিচালককে উত্তর সিটি করপোরেশনের ১০ টাকার একটি রিসিট ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া যাত্রী উঠিয়ে বাস টার্মিনাল এলাকা ছেড়ে যাওয়ার সময় দিতে হচ্ছে আরও ১০ টাকা। এ কারণে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া লোকজনদের কাছ থেকে চাওয়া হচ্ছে বাড়তি ভাড়া।

সিএনজিচালক মোতালেব বলেন, আমি মহাখালী বাস টার্মিনালের মেইন রাস্তায় যাত্রী নামিয়েছি। তারপরও আমাকে যাত্রী নামানোর কারণে ১০ টাকা দিতে হয়েছে। এখানে অপেক্ষা করলে আরেক ধাপ টাকা দিতে হবে।

টাঙ্গাইল থেকে আসা যাত্রী সাহেদুর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, টাঙ্গাইল থেকে ২০০ টাকা ভাড়া দিয়ে মহাখালী বাস টার্মিনাল এসে নামলাম। ভাড়াতো কিছুটা বেশি নিয়েছে। কি আর করা কালকে থেকে অফিস খোলা তাই চলে আসতে হলো।

ময়মনসিংহ থেকে পরিবার নিয়ে আসা গার্মেন্টসকর্মী সাকিব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, জীবিকার তাগিদেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চলে এসেছি। তবে অন্যান্য ঈদে যেমন যাওয়া কিংবা আসার সময় গাজীপুরে যানজটে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হতো, এবার ভোগান্তি সেরকম হয়নি।IMG_20220507_150226

এনা ট্রান্সপোর্টের সহকারী ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এবার সড়কে যানজট এতোটা ছিলো না। চালকরা গাড়ি চালিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ট্রিপ মারতে পেরেছে। এবার ধাপে ধাপে ছুটি হওয়ায় যানজট যেমন কম ছিলো, সেই সঙ্গে যাত্রীও কম ছিলো।

ঢাকা-টাঙ্গাইল রুটে চলাচলকারী নিরালা পরিবহনের বুকিং মাস্টার আবুল কালাম বলেন, গাজীপুর ফ্লাইওভার খুলে দেওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে যেমন স্বস্তি ছিল, সেই সঙ্গে যানজট অন্যান্য বছরের তুলনায় কম ছিল।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলার কারণে বাসের যাত্রী সংখ্যা এবার কম ছিল। এছাড়া লম্বা ছুটি ও পরিবারের সদস্যদের আগেভাগেই বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ায় বাসে যাত্রীর চাপ কম ছিল। মোটরসাইকেলে ২০ লাখের মতো যাত্রী নেওয়ায় বাসগুলো যাত্রী সংকটে ছিল, অনেক ট্রিপ ক্যান্সেল হয়েছে।