কৃষকের জন্য দুঃসংবাদ, আবারও ভারী বৃষ্টির শঙ্কা

ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’র প্রভাবে গত সপ্তাহে টানা বৃষ্টির কারণে উত্তরাঞ্চলসহ দেশের নিচু এলাকাগুলোতে ধানসহ বহু শস্য এখন পানির নিচে। কৃষক এই ফসল কিভাবে ঘরে তুলবে এই দুশ্চিন্তার মধ্যেই আবহাওয়া অধিদফতর নতুন করে উত্তরাঞ্চলে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিলো। পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে উত্তরাঞ্চলে মাঝারি ধরণের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্য এলাকাগুলোর কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে।

আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, উত্তরাঞ্চলের দিকে ভারী বৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে। গরম কিছুটা বাড়লেও এই বৃষ্টির কারণে তা আবার কমে আসতে পারে। এছাড়া অন্য এলাকায়ও এই মৌসুমের স্বাভাবিক আবহাওয়া হিসেবে কোথাও কোথাও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং আশেপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। এটি উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় অশনির কারণে যে বৃষ্টি হয়েছে তাতেই উত্তরাঞ্চলের অনেক এলাকার পাকা ধান এখন পানির নিচে। এর উপর আবার আজ পূর্বাভাসে বলা হয়েছে,  রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়; রাজশাহী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বিজলী চমকানোসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরণের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।

আজ বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, টানা বৃষ্টিতে কু‌ড়িগ্রা‌মের রৌমারী উপজেলার মাদাইডাঙ্গা বিল পানিতে টইটুম্বুর। হাজার হেক্টরেরও বে‌শি আয়তনের এই বি‌লে আবাদ করা হয়েছে বো‌রো ধান। পা‌নি নিষ্কাশনের সু‌বিধা না থাকায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ধান কেটে ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় হাজা‌রও কৃষক। বিলের পানি নিষ্কাশনে স্থায়ী ও টেকসই ব্যবস্থা নিতে সরকা‌রের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।

শুধু কুড়িগ্রাম নয়, ধান চাষ হয় এমন বেশিরভাগ এলাকায় একই অবস্থা।

এই অবস্থার মধ্যে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আবারও বৃষ্টি ফলে কৃষকের শঙ্কা বাড়বে কিনা জানতে চাইলে কৃষিবিদ ড. মিজানুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এটি সত্যিই খুব আশংকার কথা। এমনিতেই ধান সব পানির নিচে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের নিচু এলাকাগুলোর ধান। এই অবস্থায় আবার বৃষ্টি হলে কৃষকের ধান ঘরে উঠানোই কঠিন হয়ে পড়বে। অবশ্য আমাদের জন্য আরও আশংকা— সামনে মে মাসের পর। তখন আবার পুরো বর্ষা মৌসুম চলে আসবে। সুতরাং ধান দ্রুত ঘরে তোলা দরকার।

এদিকে নদী বন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক সতর্কবার্তায় বলা হয়, রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, ঢাকা, কুমিল্লা এবং সিলেট অঞ্চলের উপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি ও অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর  সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।