জাতীয় কবি কাজী নজরুলের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচি

আগামী ১১ জ্যৈষ্ঠ ২৫ মে বুধবার, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী। এবার জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে— ‘বিদ্রোহীর শতবর্ষ’। এ উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার।

সোমবার (২৩ মে) সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ২৫ মে সকাল সাড়ে ৬টায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও সচিবের নেতৃত্বে কবি নজরুল ইনস্টিটিউটসহ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ঢাকায় অবস্থিত বিভিন্ন দফতর-সংস্থা কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে।

এ বছর বিদ্রোহী কবির জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান হবে নজরুল স্মৃতিবিজড়িত কুমিল্লায়। কুমিল্লার বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন প্রাঙ্গণে (টাউন হল) ২৫ মে সকাল ১১টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানায়, প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন। অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন (রিমি), কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. ক. ম. বাহাউদ্দিন বাহার ও কবি নাতনি খিলখিল কাজী উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আবুল মনসুর। স্মারক বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও নজরুল গবেষক শান্তিরঞ্জন ভৌমিক। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করবেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ শিল্পকলা অ্যাকাডেমির পরিবেশনায় নৃত্যনাট্যসহ ৩০ মিনিটের সাংস্কৃতিক পর্ব থাকবে।

ঢাকাসহ জাতীয় কবির স্মৃতিবিজড়িত ময়মনসিংহের ত্রিশাল, কুমিল্লার দৌলতপুর, মানিকগঞ্জের তেওতা, চুয়াডাঙ্গার কার্পাসডাঙ্গা এবং চট্টগ্রামে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। এ উপলক্ষে নজরুল মেলা, নজরুল বিষয়ক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করবে স্থানীয় প্রশাসন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকাসহ দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা, রচনা ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতা আয়োজনের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করা হবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসগুলো যথাযথ কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করবে। যে সব জেলায় জাতীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নজরুল জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে না, সে সব জেলার জেলা প্রশাসকরা স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি ও সুধীজনের সহযোগিতায় কমিটি গঠন করে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন করবে। জাতীয় পর্যায়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানমালা বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, বেসরকারি বেতার ও টেলিভিশন চ্যানেল ব্যাপকভাবে সম্প্রচার করবে।

জাতীয় কবির ১২৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী জাতীয় পর্যায়ের মূল অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানগুলো ব্যাপক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এসব স্থানের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এছাড়া কবির স্মৃতিবিজড়িত জেলাগুলোসহ সব জেলায় জাতীয় কবির ছবি, কবিতা, পরিচিতি ও চিত্রকর্ম প্রদর্শন এবং বিভিন্ন সড়ক দ্বীপগুলোতে ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার ও ডিজিটাল ডিসপ্লে স্থাপন এবং আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হবে।

কবি নজরুল ইনস্টিটিউট ও বাংলা অ্যাকাডেমির সহযোগিতায় জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণিকা ও পোস্টার মুদ্রণ করবে। কবি নজরুল ইনস্টিটিউট-সহ সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সকল দফতর ও সংস্থা এ উপলক্ষে বিশেষ আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করবে। এছাড়া কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালকের তত্ত্বাবধানে ঢাকার রবীন্দ্র সরোবরে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।

জাতীয় পর্যায়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের  ১২৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে গত ১৮ এপ্রিল সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি’র সভাপতিত্বে বাংলাদেশ শিল্পকলা অ্যাকাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার হলে জাতীয় কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এসব কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।