বিমানের অফিসে দুদকের অভিযান

মিসর থেকে বোয়িংয়ের দুটি উড়োজাহাজ লিজের নামে ১১শ’কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদক। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (৩১ মে) দুদকের একটি তদন্ত দল বিমান অফিসে অভিযান চালিয়েছে। দুদকের উপ-পরিচালক সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে অভিযানিক দলটি বিমান অফিস থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নথি জব্দ করেছে। দুদক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে মিসরীয় উড়োজাহাজ লিজ নেওয়ার ক্ষেত্রে ভয়াবহ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। পাঁচ বছরের চুক্তিতে ইজিপ্ট এয়ার (মিসর) থেকে বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর নামে দুটি উড়োজাহাজ লিজ নেয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। কিন্তু বছর যেতে না যেতেই ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফ্লাইট পরিচালনার পর একটি উড়োজাহাজের ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। পরে এটি সচল রাখার জন্য ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। কিন্তু ওই ইঞ্জিনও নষ্ট হয়ে যায়। সেই ইঞ্জিন মেরামত করতে পাঠানো হয় যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠানে। এতে বাংলাদেশ বিমানকে গচ্চা দিতে হয়েছে ১১শ কোটি টাকা। বিষয়টি নিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি তদন্ত করে। তদন্তে অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য উঠে আসায় বিষয়টি আরও বিস্তারিত অনুসন্ধান করতে সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে দুদকের একটি চিঠি পাঠানো হয়। পরবর্তীতে দুদকের পক্ষ থেকে বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য উপ-পরিচালক সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়।

দুদক সূত্র জানা গেছে, দুদকের অনুসন্ধান কমিটি গত ২৮ মে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নথিপত্র চেয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে একটি চিঠি পাঠায়। ওই চিঠিতে অনুসন্ধান টিম লিজ নেওয়ার দরপত্রসহ অন্তত ১৩ ধরনের নথিপত্র অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে সরবরাহের জন্য বিমান কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে।

জানতে চাইলে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ মোস্তফা কামাল বলেন, বিষয়টি সংসদীয় কমিটিতে ছিল। তারা সেটি দুদকে রেফার করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুদকের দল এসেছে। আমরা তাদের স্বাগত জানাই। দুদক যেন নির্বিঘ্নে তাদের কাজ শেষ করতে পারে সেজন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বিমানের পরিচালক (প্ল্যানিং অ্যান্ড ট্রেনিং) এয়ার কমোডর (অব.) মো. মাহবুব জাহান খান বলেন, 'আজ দুদকের দুজনের একটি দল এসেছে। আমাদের সকল তথ্য সংরক্ষিত আছে। আমি ২০১৮ সালে জয়েন করেছি। এর আগেও আরও কয়েকবার তদন্ত হয়েছে। আমি দেখেছি ইজিপ্টের দুটি বিমান ভিয়েতনামে আছে, যেখান থেকে ঠিক করে ফেরত দেওয়ার কথা। এই জটিলতার মধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি।

মাহবুব জাহান খান বলেন, বিমান এখান থেকে শিক্ষা নিয়েছে। এটা সবচেয়ে বড় কথা। এই ঘটনার পর বিমানের একটি লিজ গাইডলাইন হয়েছে। ভবিষ্যতে উড়োজাহাজ লিজ নেওয়ার ক্ষেত্রে কতগুলো সভা হবে, বোর্ডে কতবার উপস্থাপন করতে হবে, তা নির্ধারণ করা হয়েছে।