ঢাবি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের লালনকেন্দ্র: উপাচার্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) গণতান্ত্রিক মূল্যবোধগুলোর লালনকেন্দ্র উল্লেখ করে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কে কোন সংগঠন করবে এটা একেবারেই তাদের নিজস্ব এখতিয়ার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণতন্ত্রের মূল্যবোধক গভীরভাবে বিশ্বাসী।’

শুক্রবার (৩ জুন) সকাল সোয়া ১১টায় ঢাবি ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

ক্যাম্পাসে অনেক ছাত্রসংগঠন প্রবেশের চেষ্টা করলে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন চড়াও হচ্ছে- এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবস্থান কী— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে ঢাবি ভিসি বলেন, ‘আজকে আমাদের অ্যাটেনশন দুটো দিকে; ভর্তি পরীক্ষা এবং সিনেট নির্বাচন। তারপরও প্রাসঙ্গিকভাবে অনেক বিষয় চলে আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কে কোন সংগঠন করবে এটা একেবারেই তাদের নিজস্ব এখতিয়ার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণতন্ত্রের মূল্যবোধক গভীরভাবে বিশ্বাসী।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধগুলোর লালনকেন্দ্র উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব; তাদের অসাম্প্রদায়িক মানবিক মূল্যবোধ যারা গ্রহণ করে ছাত্রসংগঠন করবে তাদের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয় একটি অবাধ বিচরণকেন্দ্র। তাই আমরা প্রত্যাশা করি আমাদের শিক্ষার্থীরা এই মূল্যবোধ গ্রহণ করেই চলবে।’ 

ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কোনও পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি একটি প্রত্যাশিত বিষয়। আমরা সকলে একমত হতে পারলে এবং সমন্বয় করতে পারলে আবারও ডাকসু নির্বাচন হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার বয়সসীমা বাড়ানো প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, ‘এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। শিক্ষার কোনও বয়স নেই সেটি সত্য। কিন্তু ফর্মাল এবং ইনফর্মাল শিক্ষার কিছু ধাপ আছে। সে বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সিদ্ধান্ত নেবে।’

ঢাবি ভর্তি পরীক্ষা ৩

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তি লাঘব করতে বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা নেওয়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে উপাচার্য বলেন, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের আর্থিক এবং সময়ের ভোগান্তি লাঘবের জন্য আমরা বিভাগীয় শহরে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আমাদের সম্মানিত ডিনরা সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন এবং অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরাও আমাদের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।

উপাচার্য বলেন, ‘দ্বিতীয় বারের মতো বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিভাগীয় শহরে যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আছে সেগুলো আমাদের সহযোগী হিসেবে সমন্বয় করছে। ইতোমধ্যে বিভাগীয় শহরের বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন উপাচার্যের সাথে আমার কথা হয়েছে। তারাও কোনোধরনের সমস্যা ছাড়া ভালো ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা পরিচালনা করছেন।’

তিনি বলেন, ‘গতকাল অস্ট্রেলিয়ার একটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি টিম এসেছিল। আমরা যখন তাদের বলি যে আমাদের ভর্তি পরীক্ষায় লক্ষাধিক পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে এবং আমরা তাদের মাত্র কয়েক হাজারকে নিতে পারি; তখন তারা খুব বিস্মিত হয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। সারা বাংলাদেশের মেধাবী শিক্ষার্থী থেকে বাছাই করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। এটি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ও মর্যাদাকে ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত করে।’

ঢাবি (2)

উপাচার্য বলেন, ‘আজ মাত্র ৯৩০টি আসনের বিপরীতে ৩০ হাজারের অধিক পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে। আজকের আমাদের পরীক্ষার প্রধান সমন্বয়কারী হলেন বিজনেসের স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ আব্দুল মঈন। অনেক সহকর্মী ডিনের প্রতিনিধি হয়ে বিভাগীয় শহরগুলোতে গিয়েছেন। সামনের দিনগুলোতে ক্রমান্বয়ে অভিজ্ঞতার আলোকে এটি একটি প্রতিষ্ঠিত রূপ লাভ করবে। সেক্ষেত্রে এখনের অভিজ্ঞতাকে সামনে কাজে লাগানো যাবে।’ ভর্তি পরীক্ষা সফল করতে তিনি সবার সহযোগিতাও কামনা করেন।