‘মালয়েশিয়ায় সিন্ডিকেট হলে অন্য শ্রমবাজারেও প্রভাব ফেলবে’

জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বায়রার সাবেক সভাপতি নূর আলী বলেছেন, সিন্ডিকেট যারা করতে চায় তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। মালয়েশিয়ার বাজারে সিন্ডিকেট করতে সফল হলে জনশক্তি রফতানির সব বাজারে তারা সিন্ডিকেট করবে।

শনিবার (১৮ জুন) দুপুরে রাজধানীর বনানীতে একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বায়রা সিন্ডিকেটবিরোধী মহাজোট।

সংবাদ সম্মেলনে বায়রার সাবেক মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ২ জুন মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী সারাভানান বাংলাদেশ সফরে আসেন এবং প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইমরান আহমদের সঙ্গে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের মিটিংয়ের মাধ্যমে

মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণের প্রক্রিয়া নিশ্চিত করেন। আমরা অত্যন্ত আশাবাদী ছিলাম এই মিটিংয়ের মাধ্যমে সকল বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য মালয়েশিয়ার শ্রম বাজারটি উন্মুক্ত করা হবে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় সভায় উপস্থিত মালয়েশিয়ার মন্ত্রী আপনাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবের এক পর্যায়ে রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যার প্রশ্ন উত্থাপিত হলে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন— গত ১৯ ডিসেম্বর সই করা সমঝোতার স্মারক অনুযায়ী রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা নির্ধারণ ও নির্বাচন কর্মীগ্রহণকারী দেশের ইচ্ছা অনুযায়ী হবে। এসময় তিনি আরও উল্লেখ করেন— মন্ত্রী দেশে ফেরত যাওয়ার পরে মালয়েশিয়ার ক্যাবিনেটের মাধ্যমে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এর আগে বিভিন্ন পত্র- পত্রিকায় যে ২৫টি লাইসেন্সের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে তাদের বাইরে অন্য কোনও এজেন্সির পক্ষে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো অসম্ভব বলে প্রতীয়মান হয়। যার ফলে সব বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী প্রেরণ অনিশ্চিত হওয়ায় আমরা সকল রিক্রুটিং এজেন্সি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছি।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সাল থেকে অদ্যাবধি গত ১৪ বছরে প্রায় ৯৮ শতাংশ রিক্রুটিং এজেন্সি কর্মী প্রেরণ করতে সক্ষম হয়নি।

তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময় মালয়েশিয়ার বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী ২৫টি লাইসেন্সের ব্যাপারে আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের  মন্ত্রী অনুমোদন প্রদান করেছেন বলে যে বিবৃতি প্রদান করেন, তা সম্পর্কে গত ১৭ জুন আমাদের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বাংলাদেশের কয়েকটি পত্রিকার মাধ্যমে বিশদভাবে বর্ণনা করে বলেছেন যে, ২৫টি লাইসেন্সের অনুমোদন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী কোনও অনুমোদন প্রদান করেননি এবং যৌথ সভায় এই সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এসময় সবার জন্য মালয়েশিয়ার বাজারে কর্মী পাঠানোর আহ্বান জানায় বায়রা নেতারা। তারা প্রতিশ্রুতি প্রদান করে বলেন, সরকার নির্ধারিত ফিতেই তারা কর্মী পাঠাবেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন— বায়রার সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাশার, সাবেক মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী হায়দার চৌধুরী, সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাত হোসেন, সাবেক অর্থ সচিব মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, সাবেক অর্থসচিব মিজানুর রহমান, রিক্রুটিং এজেন্সি ঐক্য পরিষদের সভাপতি টিপু সুলতান প্রমুখ।