ঢাবিতে ‌‘পরম্পরা ছাপচিত্র’ প্রদর্শনীর উদ্বোধন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে শিল্পগুরু সফিউদ্দীন আহমেদের শততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী উৎসবের শুরু হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) দুপুরে অনুষদের ওসমান জামাল মিলনায়তনে ‘পরম্পরা ছাপচিত্র’ শীর্ষক প্রদর্শনীর উদ্বোধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।’

চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় ‘পরম্পরা ছাপচিত্র’ উদ্বোধন করেন চিত্রশিল্পী অধ্যাপক রফিকুন নবী। আলোচনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সৈয়দ আজিজুল হক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক সৈয়দা মাহবুবা করিম, শিল্পগুরু সফিউদ্দীন আহমেদ চত্বরের কর্ণধার ও শিল্পীপুত্র আহমেদ নাজির, জন্মশতবর্ষ ২০২২ উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক শিল্পী অধ্যাপক রোকেয়া সুলতানা, সদস্য সচিব শিল্পী অধ্যাপক মো. আনিসুজ্জামান, প্রিন্টমেকিং বিভাগের চেয়ারম্যান শিল্পী শেখ মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ছেলে প্রকৌশলী মইনুল আবেদিন।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম সমাধিসৌধে অবস্থিত শিল্পগুরু সফিউদ্দীন আহমেদের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

সভায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে শিল্পকলার ইতিহাসে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন এবং শিল্পী কামরুল হাসানের পর শিল্পগুরু সফিউদ্দিন আহমেদের অবস্থান। তিনি ছিলেন ছাপচিত্রের পথিকৃৎ। ৭২ বছর ধরে তিনি ছবি, তৈলচিত্র, রেখাচিত্র এঁকেছেন। কলকাতা আর্ট স্কুলে মেধায় দুই জন শিক্ষক হয়েছেন একজন শিল্পাচার্য, আরেকজন শিল্পগুরু সফিউদ্দিন আহমেদ। তার ছাপচিত্রে পরিচ্ছন্নতার বোধ ছিল। এটি ছিল তাঁর লেগে থাকার সততা। তিনি পারাবত তৈলচিত্র নিয়ে প্রেসিডেন্ট পুরস্কার পেয়েছিলেন। ছাপচিত্রের জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী বলেন, আমি যদি একটু আলোকিত হয়ে থাকি সেটি স্যারের মাধ্যমে। উনি যে শুধু আমাদের বা উপমহাদেশে শিল্পী ছিলেন তাই নয়, বরং নামিদামি শিল্পী ছিলেন। বাংলাদেশে শিল্পকলার যে চর্চা এ সমস্ত কিছুর মূলে আমাদের যে চার-পাঁচ জন শিল্পী জড়িত ছিলেন, তার মধ্যে সফিউদ্দিন স্যারের অগ্রণী ভূমিকা ছিল। তাঁর শততম জন্মদিন পালন করে নিজেদের গর্বিত করছি। আমি বোধ হয় এখানের সবচেয়ে পুরনো ছাত্র। এর মধ্য দিয়ে আমরা শুধু ব্যক্তি সফিউদ্দিন আহমেদকে নয়, তার কর্ম সাধনা, শিল্প অবদান সবকিছু মিলিয়ে তাকে স্মরণ করছি। আমি যখনই কোনও চিত্র আঁকি তখন মনে হয়, আমার স্যার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে, এই বোধ সবার মধ্যে থাকা উচিত৷ সবসময় আমরা তাকে স্মরণ করবো।

‘শিল্পগুরু সফিউদ্দীন আহমেদ জন্মশতবর্ষ-২০২২’ উদযাপনের আয়োজন করেছে চারুকলা অনুষদ, প্রিন্টমেকিং বিভাগ এবং চারুকলা অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠান আগামী ২৪ জুন ২০২২ পর্যন্ত মোট ২ দিন চলবে।