করোনাকালে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিকে শিক্ষার্থী কমেছে: ব্র্যাকের গবেষণা

প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিকে শিক্ষার্থী কমেছে বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। বাংলাদেশের শিশুদের ‘শিখন ঘাটতি তথা লারনিং লস’ অনুমান করার জন্য ওই গবেষণা করা হয়। ব্র্যাক আইইডি’র প্রোগ্রাম হেড সমীর রঞ্জন নাথ ‘লিটারেসি টেস্ট’ নামে এটি পরিচালনা করেন।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) ব্র্যাক আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তালিকাভুক্তির হার ২০২০ সালে ৬২ দশমিক ৭ শতাংশ ছিল, যা ২০২১ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬ শতাংশ। প্রাথমিকে ২০২০ সালে ৯৬ দশমিক ২ শতাংশ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করলেও ২০২১ সালে সেটা কমে দাঁড়িয়েছে ৯৩ দশমিক ৬ শতাংশে।

করোনা মহামারির আগে প্রাক-প্রাথমিকে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের অংশগ্রহণের হার বেশি থাকলেও মহামারি শুরুর পর সেই হার কমে গেছে। পুনরায় স্কুল চালু হওয়ার পর প্রাথমিকে ৭৮ দশমিক ৬ শতাংশ, মাধ্যমিকে ৮০ দশমিক ৬ শতাংশসহ মোট ৭৯ দশমিক ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে। উপস্থিতির হার ছেলেদের তুলনায় মেয়েদেরই বেশি। গ্রামে ৮০ দশমিক ৯ শতাংশ হলেও শহরে তার পরিমাণ ৭৭ দশমিক ৫ শতাংশ।

গবেষক সমীর রঞ্জন নাথ বলেন, পড়াশুনার ক্ষতি একটি বাস্তবতা। প্রশ্ন হচ্ছে, কত দ্রুত আমরা সেটা পুনরুদ্ধার করতে পারি। সব শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন শুরু করা যেতে পারে, কিংবা তাদের শ্রেণিবিন্যাস করে পুনরুদ্ধারের কৌশলগুলি প্রস্তুত করা যেতে পারে। নিয়মিত শিক্ষকদের কেন্দ্রে রেখে অভিভাবক, সহকর্মী, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক এবং অস্থায়ী শিক্ষকদের ব্যবহার করা যেতে পারে। শিক্ষার্থীদের ফলো-আপ মূল্যায়ন অগ্রগতি বুঝতে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) মো. মুহিবুর রহমান বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা বহুমুখী সমস্যায় ভুগছে। আমি সাম্প্রতিক সমস্যাগুলোর ওপর জোর দেবো, সেটা হচ্ছে স্কুল বন্ধ এবং শেখার ক্ষতি। এত শিগগিরই আমরা ব্যাপকভাবে মূল্যায়ন করবো না, আমরা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছি। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, যদি সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করি, এগিয়ে যাওয়ার জন্য শিক্ষাগুলো ভাগ করে নেই, তবে একটি সমাধান খুঁজে পেতে পারি।

ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, মহামারি চলাকালীন স্কুল বন্ধ হওয়ার কারণে শিক্ষার ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। পড়াশুনার ক্ষতি পুষিয়ে ঝরে পড়া এবং যাদের ঝড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সেসব শিশুকে ফিরিয়ে আনতে আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে মেয়ে, প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের শিশুদের জন্য।