‘খাদ্যশস্যের মূল্য স্থিতিশীল রয়েছে’

গত কয়েক বছর ধরেই খাদ্যশস্যের বাজার মূল্য স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সরকারের পদক্ষেপের কারণে খাদ্যশস্যের অভ্যন্তরীণ এ বাজার মূল্য স্থিতিশীল রয়েছে বলে মন্ত্রণালয়ের দাবি। মঙ্গলবার (৫ জুলাই) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালে মোটা চালের কেজিপ্রতি জাতীয় গড় খুচরা মূল্য ছিল ৩৭.০৬ টাকা। ২০১৯ সালে তা কমে ২৯.২৯ টাকায় আসে। ২০২০ ও ২০২১ সালে হয় যথাক্রমে ৩৮.৪৪ টাকা ও ৪৩.২৭ টাকা। ২০২২ সালে কেজিপ্রতি মূল্য ৪২. ৯৮ টাকা।

বর্তমানে দেশে কোনও খাদ্য ঘাটতি নেই দাবি করে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৭৬.০৮ লাখ মেট্রিক টন চাল ও ১০.৮৫ লাখ মেট্রিক টন গমসহ ৩৮৬.৯৩ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উৎপাদিত হয়। এই উৎপাদনের পরিমাণ ওই সময়কার খাদ্যশস্যের চাহিদার তুলনায় বেশি ছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে সদ্য বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে খাদ্যশস্যের প্রাক্কলিত উৎপাদন ৪০১.৩৬ লাখ মেট্রিক টন (চাল ৩৮৯.১০ লাখ মেট্রিক টন ও গম ১২.২৬ মেট্রিক টন)। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে উদ্বৃত্ত খাদ্য উৎপাদন হয়েছে বলে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়।

বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরের ২৮ জুন পর্যন্ত সরকারিভাবে ৬.৮৪ লাখ মেট্রিক টন চাল ও ৫.৪২ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানি করা হয়। এ সময়ে বেসরকারিভাবে ৩.০৫ লাখ মেট্রিক টন চাল ও ৩৩.৪১ লাখ মেট্রিক টন গমসহ ৩৬.৪৬ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য আমদানি করা হয়েছে।

২০২১-২২ অর্থবছরের ২৩ জুন পর্যন্ত ওএমএস’র আওতায় ৪.৬৩২ লাখ মেট্রিক টন চাল ও ৪.২২ মেট্রিক টন গম বিতরণ করা হয়েছে। আগের অর্থবছরে ১.২৮ লাখ মেট্রিক টন চাল ও ২.২৮ মেট্রিক টন গম বিতরণ করা হয়েছিল। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭.৫০ লাখ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। এর আগের অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ৭.৪২ লাখ মেট্রিক টন।

এদিকে ইউনিয়ন পর্যায়ে অতি দরিদ্রদের জন্য প্রতিকেজি চাল ১০ টাকা হারে বিতরণের কার্যক্রম অব্যাহত আছে বলে বৈঠকে জানানো হয়। সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২১-২২ অর্থবছরের সেপ্টেম্বর হতে এপ্রিল পর্যন্ত ৭ লাখ ৫০ হাজার ৩৭ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। উপকারভোগী পরিবারের সংখ্যা বাড়িয়ে ৫০ লাখ হতে ৫০ লাখ ১০ হাজার ৫০৯ জনে উন্নীত করা হয়েছে।

বৈঠকে বাজার মনিটরিংয়ের কার্যক্রম যথাযথভাবে পরিচালনা করে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য সহনশীল পর্যায়ে রাখার জন্য সবার সহায়তা কামনা করা হয় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদারের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, নুরুল ইসলাম নাহিদ ও মো. আয়েন উদ্দিন অংশগ্রহণ করেন।