আজ শনিবার (৭ জুন) বিশ্বজুড়ে পালিত হবে ‘বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবস ২০২৫’। প্রতি বছর এই দিনটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) উদ্যোগে পালিত হয়ে থাকে। এ বছরের প্রতিপাদ্য—‘ফুড সেফটি: সায়েন্স ইন অ্যাকশন’ (নিরাপদ খাদ্য: বিজ্ঞানের প্রয়োগে নিরাপত্তা)।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, অনিরাপদ খাদ্য বাংলাদেশসহ অনেক দেশের জনগণের উচ্চ রক্তচাপ ও নানা অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে। গবেষণা অনুযায়ী, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে খাদ্যবাহিত রোগের কারণে উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাচ্ছে এবং স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় প্রতি বছর ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা ও জ্ঞান প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সম্প্রতি স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এমন এক পুষ্টিগত সংকটে রয়েছে যেখানে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারাজনিত দীর্ঘস্থায়ী অসংক্রামক রোগ এবং বিপাকজনিত সমস্যাগুলো বাড়ছে উদ্বেগজনকভাবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর বিশ্বে ১ কোটিরও বেশি মানুষ উচ্চ রক্তচাপজনিত কারণে মারা যায়। অথচ স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও যথাযথ নীতি গ্রহণের মাধ্যমে এই মৃত্যুর বড় অংশ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
‘বাংলাদেশ এনসিডি স্টেপস সার্ভে ২০২২’ অনুযায়ী, দেশের ৩৭ শতাংশ মানুষ খাবারের সঙ্গে অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ করেন এবং ১৩ শতাংশ মানুষ নিয়মিত উচ্চমাত্রায় লবণযুক্ত ফাস্ট ফুড খান। ফলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি দিন দিন বেড়েই চলেছে।
বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবস ২০২৫ উপলক্ষে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞার (প্রগতির জন্য জ্ঞান) নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, ‘স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি অনেকাংশেই কমানো সম্ভব। এজন্য খাবারে লবণের পরিমাণ কমানো, আঁশযুক্ত খাবার এবং পরিমিত পরিমাণে শাকসবজি গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন ও সেগুলোর কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করাও জরুরি।’