পারিবারিক সহিংসতায় বেড়েছে মাদকসেবন ও আত্মহত্যার প্রবণতা: ফ্লাড

পারিবারিক সহিংসতার কারণে দেশে মাদকসেবন ও আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে, এমনটাই মনে করেন মানবাধিকার সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল’ এন্ড ডেভেলপমেন্ট (ফ্লাড) এর চেয়ারপারসন ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। মঙ্গলবার (৫ জুলাই) কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এ একটি ‘ডমেস্টিক ভায়োলেন্স এন্ড মেন্টাল হেলথঃ এভরিবডি’স বিজনেস’ শিরোনামে আয়োজিত সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।

বিগত দুই বছর হতে কোভিড-১৯ মহামারি প্রাদুর্ভাবের পর থেকে পারিবারিক ও অন্যান্য সহিংসতার বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে সেমিনার আয়োজন করে ফাউন্ডেশন ফর ল’ এন্ড ডেভেলপমেন্ট (ফ্লাড)।

অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, ‘পারিবারিক সহিংসতা মাত্র স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, তাতে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও শিকার হন। সহিংসতার ভিকটিমরা শুধুমাত্র শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না, মানসিকভাবেও মারাত্মক বিপর্যস্থ হন। এ কারণে দেশে মাদকসেবন, উচ্ছৃঙ্খলতা ও আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে।

এদিন ফ্লাডের আইন ও গবেষণা বিভাগের পরিচালক ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম বলেন, পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় পুরুষেরা নির্যাতক হিসেবে যেমন সত্য, তেমনি বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় সামাজিক অবক্ষয়ের কারণে পুরুষরাও নারীদের পাশাপাশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। পুরুষ নির্যাতনের ঘটনা সবসময় অদৃশ্যমান ঘটনা হয়ে বিরাজ করছে। তাই সময়ের দাবি, আজ পুরুষ নির্যাতনের বিরুদ্ধেও আইনের প্রবর্তন অতিব জরুরি এবং আবশ্যক।

সাইকিওর অর্গানাইজেশনের প্রতিনিধি ও সিনিয়র সাইকোলজিস্ট ফায়াজা আহমেদ সেমিনারে দেশে নির্যাতনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন এবং বর্ণনা করেন কীভাবে মানসিক নির্যাতনের শিকার ভিকটিমরা প্রতিনিয়ত মানসিক অসুস্থতায় দিন পার করে। তিনি বলেন, ছোট শিশুদের মনেও বেশিরভাগ সময় তাদের প্রতি বিরুপ আচরণ, কটাক্ষ ও উদাসীনতা তাদেরকে মানসিকভাবে ও শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে। সে কারণে মানসিক স্বাস্থ্য ও অধিকার সম্পর্কে সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং এ বিষয়টি ব্যাপকভাবে প্রচারে মাধ্যমে সবাইকে উৎসাহ প্রদান করতে হবে।

সেমিনারে পারিবারিক সহিংসতা, তার গভীরতা, কারণ এবং সমাজের উপর প্রভাব বিশেষত মানসিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

দেশে পারিবারিক সহিংসতা রোধে সচেতনতা বাড়াতে সেমিনার, ওয়ার্কশপ, গবেষণা ও বাস্তবধর্মী কর্ম পরিকল্পনার লক্ষ্যে আরও কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ফাউন্ডেশন ফর ল’ এন্ড ডেভেলপমেন্ট (ফ্লাড) এবং সাইকিওর অর্গানাইজেশন।