দেশের জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বিনিয়োগে আগ্রহী সুইজারল্যান্ড

বাংলাদেশের জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে সুইজারল্যান্ড।

বুধবার (৬ জুলাই) সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সঙ্গে তার দফতরে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আগ্রহের কথা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড।

মৎস্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সৌজন্য সাক্ষাৎকালে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ‘সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার।  বাংলাদেশ ও  সুইজারল্যান্ড দ্বিপাক্ষিক যেকোনও বিষয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারে। একইসঙ্গে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করে দুই দেশের সহযোগিতার ক্ষেত্র আরও সম্প্রসারণ করা যেতে পারে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধিসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রাকৃতিক সম্পদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের একশ’ বছরের উন্নয়ন পরিকল্পনা মাথায় রেখে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন এবং ইতোমধ্যে ডেল্টা গভর্নেন্স কাউন্সিল গঠন করেছেন। দেশের উন্নয়নে প্রাকৃতিক সম্পদকে আমরা কাজে লাগাচ্ছি, জনসাধারণের খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণ করছি। সরকারের নানা পদক্ষেপে কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে অভাবনীয় পরিবর্তন হয়েছে।’

রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড বলেন, ‘দুই দেশের সহযোগিতার ৫০ বছরপূর্তিতে ২০২২ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রসহ নতুন সহযোগিতার কর্মসূচি নিয়ে সুইজারল্যান্ড কাজ করতে চায়। এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে— জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা সংক্রান্ত কার্যক্রম বৃদ্ধি করা। এর মধ্যে অন্যতম জলবায়ু পরিবর্তজনিত অভিযোজন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি হ্রাস বিষয়ক কার্যক্রমে অর্থায়ন।’

বাংলাদেশের মতো অন্য কোনও দেশে একশ’ বছরের পরিকল্পনা দেখিনি উল্লেখ করে নাথালি চুয়র্ড আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের মাইলফলক অর্জন করেছে। এক্ষেত্রে সুইজারল্যান্ড অবদান রাখতে চায়। বাংলাদেশের জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ চরাঞ্চলে প্রাণিসম্পদ খাতে সুইজারল্যান্ডের বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। সুইজারল্যান্ডের সরকারি ও বেসরকারি খাতের বেশকিছু প্রতিষ্ঠানও এক্ষেত্রে কাজ করতে আগ্রহী।’

এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী না হলেও বিশ্বের অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য তহবিল গঠনে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব রেখেছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিপূরণে উন্নত দেশগুলোর এগিয়ে আসা উচিত। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিপূর্ণ দেশও বাংলাদেশ। বন্যাসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। সরকার ক্ষতি কাটিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য সরকার বিশেষ প্রণোদনা ও অন্যান্য সহায়তা দিয়ে থাকে।’

শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘দেশের সব মানুষের চাহিদা পূরণ করে মাংস রফতানির লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। বিশ্বের অনেক দেশ আমাদের কাছ থেকে মাংস আমদানি করতে চায়। সে সব দেশের চাহিদা অনুযায়ী আন্তর্জাতিক মানের মাংস সরবরাহ আমাদের লক্ষ্য। এজন্য দেশে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মাননিয়ন্ত্রণ ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।’