ভ্যাপসা গরমে জনজীবনে হাঁসফাঁস

আষাঢ়ের শেষ দিন আজ। কিন্তু আবহাওয়া দেখে মনে হচ্ছে ভরা চৈত্র। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁই ছুঁই। বাইরে এলেই বৃষ্টির বদলে দরদর করে ঘামে ভিজে যাওয়ার অবস্থা! তার ওপর ভ্যাপসা গুমোট গরমে রাজধানীর মানুষজন হাঁসফাঁস করছে।

একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না নগরবাসী। তবে বিপাকে পড়েছেন কোরবানির ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফেরা মানুষেরা। এই গরমে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে গিয়ে সবচেয়ে কষ্টের মুখে পড়ছেন নারী, শিশু ও বয়স্করা। কিন্তু প্রকৃতির এমন রূঢ় আচরণে কিছুই যেন বলার বা করার নেই কারও!

বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, ঢাকা, টাঙ্গাইল, রংপুর, দিনাজপুর ও নীলফামারীসহ রাজশাহী ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি আরও ২-৩ দিন অব্যাহত থাকতে পারে।

আগামী ৭২ ঘণ্টার শেষের দিকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়ার সম্ভাবনার কথা বলা হলেও ভারী বৃষ্টিপাতের কোনও পূর্বাভাস মিলছে না। ফলে কাঠফাটা রোদ আর ভ্যাপসা গরমে নাভিশ্বাস ওঠা জনজীবনেও স্বস্তি ফিরছে না সহসা।

এতসব বুঝতে চান না রিকশাচালক সোবাহান মিয়া। রামপুরা বাজার এলাকায় যাত্রীর অপেক্ষায় সড়কের পাশে গাড়িটি রেখে উঁচু ভবনের ছায়ায় দাঁড়িয়েছেন তিনি। বাংলা ট্রিবিউনকে বলছিলেন, গরমে টেকা ভীষণ দায়, কঠিন বৃষ্টি হওয়া দরকার। তা না হলে গতকালের মতোই একবেলা রিকশা চালিয়ে অন্যবেলা বাসায় বসে থাকতে হবে।

ঈদের ছুটি শেষে রংপুর থেকে সড়কপথে ঢাকায় ফেরা দেলোয়ার বলেন, কী আর বলবো গরমের কথা! দেখতেই পারছেন, ঘামে জামাকাপড় সব ভিজে একাকার হয়ে গেছে। শরীর আর চলছে না, এখন বাসায় গিয়ে বিশ্রাম নেবো। একই ধরনের অভিব্যক্তি এসেছে শহরে ফেরা অন্য আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে।293130849_1037387116982104_8978364504899034469_n

প্রচণ্ড রোদ থেকে বাঁচতে রাজধানীর সড়কগুলোতে হেঁটে চলা মানুষজনকে ছাতা মাথায় নিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে বেশিরভাগ মানুষ কোনও না কোনও যানবাহনে চেপে বসছেন। কমবেশি সবার হাতেই রয়েছে পানির বোতল। মাঝে মাঝে গলা ভিজিয়ে নিচ্ছেন অনেকে। মোড়ে মোড়ে ভ্রাম্যমাণ শরবতের দোকান এখনও বসেনি।

এদিকে গতকাল বুধবার (১৩ জুলাই) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে, ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই সঙ্গে বাতাসের আর্দ্রতা কমেছে ৪৯ শতাংশ পর্যন্ত, যা বাড়াচ্ছে গরমের তীব্রতা।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বিদ্যমান তাপদাহ আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে। আগামী ৭২ ঘণ্টার শেষ দিকে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। তবে স্বস্তি পেতে প্রয়োজন ভারী বৃষ্টির।