পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণা, ধরা পড়লেন যেভাবে

গাড়ি সার্ভিসিং করিয়ে টাকা দেননি। উল্টো ওয়ার্কশপ মালিককে দিয়েছেন হুমকি। দাবি করেছেন মোটা অঙ্কের টাকা। আর এসবের জেরেই ধরা পড়লেন পুলিশ পরিচয় দেওয়া ইকবাল মাহমুদ নামের এক প্রতারক।

রাজধানীর নিউ ইস্কাটন রোডের বিসমিল্লাহ কার এসি সেন্টার ওয়ার্কশপের মালিক শাহ মোহাম্মদ লিটনের করা মামলায় ধরা পড়েন ইকবাল।

লিটনের অভিযোগ, গত ১৬ এপ্রিল বেলা আড়াইটার দিকে ঢাকা মেট্রো–গ ১৯-৪৮৯১ নম্বরের একটি গাড়ি তার ওয়ার্কশপে নিয়ে আসে এক ব্যক্তি। গাড়িটিতে পুলিশের স্টিকার, পুলিশের গাড়িতে ব্যবহৃত লাইট এবং লোকটার হাতে ওয়াকিটকি ছিল। ওই ব্যক্তি বলেন যে তিনি পুলিশ সদর দফতরে কর্মরত।

ওয়ার্কশপ মালিক লিটন ওই লোকের গাড়ি পরীক্ষা করে বলেন, গাড়িতে ৩৫ হাজার টাকার কাজ করাতে হবে। ওই ব্যক্তি নগদ পাঁচ হাজার টাকা দেয়। ওয়ার্কশপ মালিককে বলে যায়, বাকি টাকা গাড়ি নেওয়ার সময় দেবেন।

ওই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে ওই ব্যক্তি ওয়ার্কশপে আসেন। গাড়ির সার্ভিসিং বাবদ বাকি ৩০ হাজার টাকা চাইলে, ওই ব্যক্তি মানিব্যাগ খোঁজাখুজির ভান করেন। এও বলেন, আমার মানিব্যাগে ২০ হাজার টাকা ছিল, পাচ্ছি না।

এসময় লিটনও মানিব্যাগ খোঁজাখুজি করে। এক পর্যায়ে গাড়ির পেছনের চাকার কাছে একটি মানিব্যাগ দেখেন লিটন।

লিটনে ভাষ্যে, ‘আমি তাকে বলি, এটা কি আপনার মানিব্যাগ? সে বলে হ্যাঁ। তখন সে বলে তার মানিব্যাগে ২০ হাজার টাকা ছিল, সেটা কোথায়। তারপর সে আমাকে বলে আমি নাকি টাকাটা নিয়েছি।’

পুলিশ পরিচয় দেওয়া ইকবাল মাহমুদ লিটনকে হুমকি দিয়ে বলেন, সকালে যেন তিনি টাকা রেডি রাখেন। পরে ১৮ জুন সন্ধ্যায় ওই ব্যক্তি একটি মোটরসাইকেলে করে এসে ২০ হাজার টাকা চান। ভয়ভীতিও দেখাতে থাকেন। ওয়ার্কশপ মালিক তার পাওনা টাকা চাইলে তাকে হুমকিও দেন।

এই ঘটনায় ২৫ জুলাই রমনা থানায় মামলা করেন লিটন। মামলাটির তদন্ত শুরু করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগ। তদন্ত করে প্রতারক ইকবাল মাহমুদকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি থাকেন টিকাটুলির একটি ভাড়া বাসায়।

উদ্ধারকৃত জিনিসপত্র

ডিবির গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘লোকটি পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণা করতো। তার কাছ থেকে দুটি ওয়াকিটকি, একটি পুলিশ লেখা লাঠি ও প্রতারণার কাজে ব্যবহার করা ডিএমপির স্টিকার লাগানো গাড়িটি জব্দ করা হয়।’

তার কাছ থেকে পুলিশের জ্যাকেটও উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান উপপুলিশ কমিশনার।

মামলার বাদি মোহাম্মদ লিটন বলেন, ‘তার গাড়ি, বিভিন্ন সরঞ্জাম ও কথাবার্তা শুনে পুলিশই ভেবেছিলাম। তবে আচরণ সন্দেহজনক ছিল। এজন্য মামলা করেছিলাম।’