পাস না করেই আইনজীবী সনদ: আপিলের রায় ২১ আগস্ট

আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হয়েও এক বিচারপতির ছেলে মো. জুম্মান সিদ্দিকীকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে গেজেট প্রকাশ বৈধ ঘোষণা এবং দুই আইনজীবীকে জরিমানা সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আগামী ২১ আগস্ট আদেশের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।

রবিবার (৭ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী, ব্যারিস্টার রুহুল কুদুস কাজল ও ব্যারিস্টার অনিক আর হক। অন্যদিকে জুম্মান সিদ্দিকীর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম।

এর আগে আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির পরীক্ষায় বারবার অনুত্তীর্ণ হওয়ার পরও হাইকোর্টের এক বিচারপতির ছেলেকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী ঘোষণার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করা হয়। আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও ইশরাত হাসান বাদী হয়ে এ রিট দায়ের করেন।

রিট আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পরীক্ষায় কয়েকবার অংশ নিয়েও কৃতকার্য হতে পারেনি হাইকোর্টের এক বিচারপতির ছেলে মো. জুম্মান সিদ্দিকী। অথচ গত ১৯ সেপ্টেম্বর জুম্মান সিদ্দিকীকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে গত ৩১ অক্টোবর গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।

তাই রিটে ওই গেজেট এবং ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ বার কাউন্সিল অর্ডারের ২১(১)(খ) ও ৩০(৩) ধারা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। জুম্মান সিদ্দিকীসহ বার কাউন্সিলের সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছিল।

হাইকোর্টের মোট চারটি বেঞ্চ ওই রিট শুনতে অপরাগতা প্রকাশ করেছিলেন। তবে সর্বশেষ  বিচারপতি তারিক উল হাকিমের নেতৃত্বাধীন তৎকালীন হাইকোর্ট বিভাগ রিটটি শুনতে সম্মতি প্রকাশ করেন।

এরপর বিচারপতি তারিক উল হাকিম আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান এবং কয়েকদিন দায়িত্বপালন শেষে অবসরে যান। পরবর্তী সময়ে রিট আবেদনটির ওপর জারি করা রুল বিচারপতি গোবিন্দ্র চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মাদ উল্লাহের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে।  

শুনানি শেষে আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হওয়ার পরও বিচারপতির ছেলে মো. জুম্মান সিদ্দিকীকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে গেজেট প্রকাশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে জারি করা রুল খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। এছাড়াও এ মামলার দুই রিটকারী আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও ইশরাত হাসানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করে তাদের প্রত্যেককে ১০০ টাকা করে জরিমানার নির্দেশ দেন আদালত।

আদালত তার রায়ে বলেন, এই ধরনের রিট দায়ের করার জন্য রিটকারীদের ওপর যথেষ্ট পরিমাণে জরিমানার আদেশ হওয়া উচিৎ। কিন্তু তাদের (দুই রিটকারী) বয়স বিবেচনায় ও প্র্যাকটিসের টোকেন (জরিমানা) স্বরূপ ১০০ টাকা করে জরিমানা করা হলো। বিচারপতি গোবিন্দ্র চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মাদ উল্লাহের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

পরে হাইকোর্টের রায়টি স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন জানানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর হাইকোর্টের রায়টি স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে নিয়মিত আপিল দায়েরের নির্দেশ দেন আদালত। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।