সামিয়া রহমানের কাছে ১১ লাখ টাকা পাওনা দাবি ঢাবির

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সামিয়া রহমানের কাছে এবার ১১ লক্ষ ৪১ হাজার ২১৬ টাকা পাওনা দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এ দাবিকে ‘বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক আখ্যা দিয়ে সামিয়া রহমান বলছেন, তাকে ‘হেনস্তা করতেই’ এমন চিঠি পাঠানো হয়েছে।

বুধবার (১০ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এমন দাবি করা হয়েছে। 

সামিয়া রহমান ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান। পরে তিনি সহকারী অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান। তবে গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির অভিযোগে ২০২১ সালের ২৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় তাকে একধাপ পদাবনতি দিয়ে সহকারী অধ্যাপক করা হয়। পরে ওই বছরের ৩১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন সামিয়া রহমান। গত ৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে তাকে সব সুবিধা ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

এর ঠিক আগের দিনের তারিখে সামিয়া রহমানের কাছে টাকা পাওনা দাবি করে চিঠি দিয়েছে ঢাবি কর্তৃপক্ষ। চিঠিতে বলা হয়েছে, সিন্ডিকেটের ২৬-০৪-২০২২ তারিখের সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে আপনাকে জানানো যাচ্ছে যে, আপনার প্রভিডেন্ট ফান্ডে সুদসহ জমাকৃত টাকার পরিমাণ ১৬ লাখ ৫৮ হাজার ২১৬ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আপনার দেনা ১১ লাখ ৪১ হাজার ৬০১ টাকা পরিশোধ করার জন্য আপনাকে অনুরোধ করা যাচ্ছে। আপনার নিকট বিশ্ববিদ্যালয়ের পাওনা টাকা পরিশোধ না করলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সামিয়া রহমান বলেছেন, আমার কাছে বিশ্ববিদ্যালয় কোনও টাকা পায় না, বরং অর্জিত ছুটিতে থাকায় আমিই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে টাকা পাই। মামলায় হেরে আমাকে টাকা বুঝিয়ে না দিয়ে এবং আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক এই চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে ৩ আগস্টের স্বাক্ষর দেওয়া আছে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গতকাল (৯ আগস্ট) আমাকে মেইল পাঠানো হয়েছে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে এটা একটা বানোয়াট চিঠি।

তিনি বলেন, আমাকে হেনস্তা করার জন্য, প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন তড়িঘড়ি করে এমন চিঠি বানিয়েছে। এর কোনও ভিত্তি নেই। ছুটির কাগজপত্র আমার কাছে আছে, ছুটিতে থাকলে কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় টাকা পাবে। আমি আমার আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলছি। মামলা করবো, এই মামলাতেও বিশ্ববিদ্যালয় হারবে।

তিনি আরও বলেন, আমি ৩১ মার্চ পর্যন্ত অর্জিত ছুটি পাই। এ সময় আমি সকল সুবিধা পাবো। এরপর আমার সন্তান অসুস্থ হওয়ায় আমি এপ্রিল থেকে বিনা বেতনে ছুটি ছেয়েছিলাম। তারা আমাকে ছুটি দেওয়ায় আমি আর্লি রিটায়ারমেন্টের আবেদন করি। পরে সিন্ডিকেট মিটিংয়ে আমাকে আর্লি রিটায়ারমেন্ট দেওয়া হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাকে নভেম্বর থেকে আর্লি রিটায়ারমেন্ট দেখাচ্ছে।'