গ্যাংয়ের খরচ জোগাতে করতো চাঁদাবাজি ও ছিনতাই

দলে সদস্য রয়েছে ২০ থেকে ২৫ জন। তাদের পেছনে প্রতি মাসে খরচ হয় বিপুল অংকের টাকা। সেই টাকা জোগাড় করতে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি ও ছিনতাই, বিভিন্ন ধরনের সেটেলমেন্টের কাজ করে আসছিল চক্রের অন্যতম হোতা ওমর আলী শিশির (২৮)। এছাড়া, কারও জমি দখল নেওয়ার কাজও নিতো চক্রটি। রাজধানীর মিরপুরের কাফরুল, ভাষানটেক, ইসিবি চত্বর এলাকা ছাড়াও বাড্ডায় ত্রাস চালিয়ে আসছিল তারা। আর এসব অপরাধে ভয়ভীতি দেখাতে ব্যবহার করা হতো পিস্তল। রিমান্ডে থাকা শিশির এসব তথ্য জানিয়েছে পুলিশকে। 

রাজধানীর মিরপুর পূর্ব কাফরুল থেকে রিভলভার, গুলি ও মাদকসহ শিশিরকে মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) গ্রেফতার করে কাফরুল থানা পুলিশ। এসময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় একটি ৬ চেম্বারবিশিষ্ট লোহার তৈরি রিভলভার, ১ রাউন্ড গুলি ও ১০০ পিস ইয়াবা। কাফরুল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তারেক আহম্মেদ, সহকারী এসআই সোহেবুর রহমান, উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মারুফ হোসেন ও এএসআই বাকীর হোসেনের অভিযানে গ্রেফতারের পর দায়ের করা মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গ্রেফতার শিশিরের বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, এর আগেও মাদক মামলায় গ্রেফতার হয়েছিল সে। কয়েক মাস পর কারাভোগের পর জামিনে বেরিয়ে আবারও চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও বিভিন্ন ধরনের সেটেলমেন্টের কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল। উদ্ধার হওয়া অস্ত্র সম্পর্কে শিশির জানিয়েছে, সামনে রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কায় আগেভাগে অস্ত্রটি তার নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। এছাড়া অস্ত্রের গুলি মজুত রাখার চেষ্টাও চালিয়ে আসছিল।

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে সে আরও জানায়, বাবা-মায়ের ছাড়াছাড়ি, বাবার অন্যত্র বিয়ে, সৎ মায়ের মানসিক যন্ত্রণায় পারিবারিকভাবে অনেকটাই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পরে সে। বাড্ডায় তার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে সবাই ভীত ছিল। তার দল কিংবা দলের কারও বিরুদ্ধে কেউ কোনও কথা বলার সাহস দেখাতো না। সবাই ছিল তাদের ভয়ে তটস্থ। চাঁদাবাজি-ছিনতাই ছাড়াও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল শিশির। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ইয়াবা সরবরাহকারীরা বনশ্রী এলাকায় শিশিরের কাছে ইয়াবা পৌঁছে দিতো। পরবর্তীতে সেই সব ইয়াবা তাদের নিয়মিত ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিতো।

অভিযান পরিচালনাকারী কাফরুল থানার এসআই তারেক আহম্মেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বেশ কয়েক মাস ধরে আমাদের নজরদারিতে ছিল শিশির। এর আগেও গভীর রাতে মাইক্রোবাস নিয়ে ঘোরাঘুরির সময় তাকে তল্লাশি করা হয়। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাইক্রোবাসে থাকা কয়েকজন পালিয়ে যায়। ৮ আগস্ট সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে অস্ত্র, গুলি ও ইয়াবাসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। আমরা সেসব বিষয়ে খতিয়ে দেখছি। চক্রের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।