বাসচাপায় নিহতের পরিবারকে কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার রায়

বাসচাপায় ‘এশিয়ান ইলেকট্রনিক্স’ নামে এক দোকান কর্মচারী পিন্টু শেখের (২৮) নিহতের ঘটনায় তার পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার রায় ঘোষণা করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) ঢাকার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এএইচএম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া এ রায় দেন।

বুধবার (১৭ আগস্ট) আদালত সূত্রে এ তথ্য  জানা গেছে।

জানা যায়, আদালতের আদেশে বাস মালিক মো. নুরুল ইসলাম ও বাসচালক মো. সোহাগ মিয়াকে ক্ষতিপূরণের এই  টাকা দিতে বলা হয়েছে।

রায়ে বলা হয়, এ কথা সত্য মানুষ মরণশীল। মানুষ যেকোনও সময় মৃত্যুবরণ করতে পারে। তবে প্রতিটি মানুষ তার স্বাভাবিক মৃত্যু কামনা করে। এ দেশের মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুসহ গড় মৃত্যুর বয়স অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এ ক্ষেত্রে ৬৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকার দাবি কোনোভাবেই অস্বীকার করা যায় না। বরং এটি স্বাভাবিক ও সাধারণ হিসেবে বিবেচিত হয়। নিহত পিন্টু শেখ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। সেক্ষেত্রে তার ৬৫ বছর পর্যন্ত চাকরি করার সম্ভাবনাকে যথাযথ ও স্বাভাবিক ছিল বলে বিবেচিত হয়। ফলে তার আরও ৩৭ বছর পর্যন্ত চাকরি করার সুযোগ ছিল। কিন্তু মামলার আসামি ড্রাইভার সোহাগ দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে তাকে চাপা দিয়ে তার অকাল মৃত্যু ঘটান।

এক্ষেত্রে মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এর ১২৮, ১২৯ এবং ১৩০ ধারার বিধানমতে, পিন্টু শেখের ওয়ারিশরা ক্ষতিপূরণ পাবেন। এ আদালতের বিবেচনায় নিহত পিন্টু আরও ৩৭ বছর তথা ৪৪৪ মাস চাকরি করলে মাসিক গড়ে ২০ হাজার টাকা বেতন প্রাপ্তির মাধ্যমে সর্বমোট ৮৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রাপ্ত হতেন। তাছাড়া তিনি এবং তার আত্মীয়-স্বজন পরস্পর তাদের ভালোবাসা ও আদর সোহাগ হতে বঞ্চিত হওয়ায় সে বাবদ তারা ক্ষতিপূরণ পাবেন। এ আদালতের বিবেচনায় এ বাবদও তারা ১১ লাখ ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন। অর্থাৎ, মৃত পিন্টু শেখের মোট এক কোটি  টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, পিন্টু শেখ ২০১৬ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে বাংলামোটরের বাসা হতে বাইসাইকেল যোগে আসার পথে রামপুরা থানার মালিবাগ চৌধুরীপাড়া সিএনজি পাম্পের কাছে উত্তরা ব্যাংকের সামনে পৌঁছা মাত্র মালিবাগগামী সু-প্রভাত বাসের ড্রাইভার সোহাগ মিয়া বেপরোয়াভাবে দ্রুত গতিতে গাড়ি পেছন দিকে চাপা দেন। ফলে সাইকেলসহ বাসের নিচে পড়ে পিন্টু গুরুতর রক্তাক্ত জখম হন। স্থানীয় লোকজন তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।