পাইলট নিয়োগে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ, তদন্ত চায় বাপা

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে পাইলট নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির আটটি অভিযোগ তুলেছেন সংস্থাটির পাইলটরা। বিমানের পাইলটদের সংগঠন বাংলাদেশ এয়ারলাইন পাইলট অ্যাসোসিয়েশন (বাপা)  অভিযোগগুলো তদন্তের দাবি তুলেছে। তারা বলছেন, বিমানে পাইলট নিয়োগের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় আইন লঙ্ঘন হয়েছে। স্বয়ং বিমানের কর্মকর্তাদের স্বজনেরা নিয়োগের ক্ষেত্রে সুবিধা পেয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) বাপার পক্ষ থেকে পাইলট নিয়োগে নানা অনিয়মের কথা উল্লেখ করে তদন্ত করতে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চিঠি দেওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়, বিমানের পাইলট নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি হয়েছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। নিয়োগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিমানের ট্রেনিং বিভাগের (সিওটি) প্রধানকে। তার স্ত্রী পাইলট হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন যা নিশ্চিতভাবে স্বার্থের দ্বন্দ্ব। পাইলট নিয়োগের ক্ষেত্রে বিমানের অপারেশনাল নির্দেশনা (ম্যানুয়াল), বাপার সঙ্গে বিমানের চুক্তি চরমভাবে লঙ্ঘন হয়েছে। বাপা এসব নিয়ে প্রশ্ন তুললেও তা আমলে নেওয়া হয়নি। নতুন করে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া ওই ফ্লাইট অফিসাররা নিয়মিত ফ্লাইট অফিসার হিসেবে ফ্লাই করতে পারবেন না, যতক্ষণ না তারা ৩০০ ঘণ্টা ফ্লাই করছেন। এসব ফ্লাইট অফিসারের জন্য এখন বিমান বড় অংকের টাকা খরচ করে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।

বাপার চিঠিতে বলা হয়, বিমানের বোয়িং-৭৭৭ উড়োজাহাজ চালানোর জন্য নতুন করে কোনও পাইলট নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তবে ক্রু নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে এবং ক্রুদের বাছাই করে মেইল পাঠানো হয়েছে। ফ্লাইট অফিসার পদে একজন এয়ারলাইন ট্রান্সপোর্ট পাইলট লাইসেন্সের ক্ষেত্রে ভুয়া সনদ দিয়েছেন। তার সিমুলেটর ট্রেনিং করেননি। পরে তাকে বিমানের খরচে এ প্রশিক্ষণে পাঠানো হয়, যা সম্পূর্ণ অপচয়। বিমানের বোয়িং-৭৭৭ এর জন্য জ্যেষ্ঠ পাইলটদের পাশ কাটিয়ে এক জুনিয়র পাইলটকে পাইলটদের প্রশিক্ষক বানানো হয়েছে, যা অনৈতিক। এতে জ্যেষ্ঠ পাইলটদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

বাপার চিঠিতে আরও বলা হয়, গাফিলতির কারণে বোয়িং-৭৮৭ ফ্লাইটের ক্রুদের বিদেশে গিয়ে জেডএফটিটি ও পিপিসি প্রশিক্ষণ পুনরায় (রিটেক) নিতে হচ্ছে। এতে বিমানের একটা বড় অংকের অর্থ খরচ হবে। বিমানের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার স্ত্রীকে পাইলট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণের সময় ওই নারী পাইলটের এ বিষয়ক জ্ঞান কম থাকায় তাকে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ট্রেনিং সেন্টারে পাঠানো হয়েছিল। বর্তমানে ওই পাইলটের পক্ষে বোয়িং-৭৭৭ এর ট্রেনিং নেওয়াও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এসব অনিয়মের কারণে বিমানের বেশ কয়েকজন পাইলটের লাইসেন্স লঙ্ঘিত হয়েছে এবং ওই পাইলটদের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) চিঠি দিয়ে সতর্ক করেছে।

বাপার পাইলটদের এ চিঠির বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও বক্তব্য দেয়নি বিমান কর্তৃপক্ষ।