কখনোই নিবন্ধন করেনি ১৪ শতাংশ বেসরকারি হাসপাতাল

কখনই নিবন্ধন করেনি দেশের ১৪ শতাংশ বেসরকারি হাসপাতাল। অনিবন্ধিত হাসপাতালের সংখ্যা নিয়ে উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে। আইসিডিডিআর,বি বলছে, দেশে এমন কিছু সংখ্যক বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে, যারা নিবন্ধনের জন্য কখনই আবেদন করেনি। শতকরা হিসেবে তা প্রায় ১৪ শতাংশ। এমনকি যারা কোনও এক সময় নিবন্ধনের আওতায় এসেছিল, তাদের মধ্যেও বড় একটি সংখ্যার লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে।

মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) বেলা ১২টায় আইসিডিডিআর,বি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই গবেষণা-উপাত্ত তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির ম্যাটার্নাল অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ ডিভিশনের (এমসিএইচডি) সিনিয়র ডিরেক্টর ডা. শামস এল আরেফিন।

আইসিডিডিআর,বি জানিয়েছে, ২০১৯-২০ সালে এই গবেষণা পরিচালিত হয়। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৮০ সাল থেকে দেশে বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের অগ্রগতি শুরু হয়। অগ্রগতিটা সবচেয়ে বেশি হয় ২০০৭ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত। বর্তমানে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যসেবার জন্য নির্ভর করে বেসরকারি হাসপাতালের ওপর। বেসরকারি হাসপাতালের ওপর মানুষের এই নির্ভরশীলতার কারণ হলো সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা, পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ নানা সংকট। ১৯৮২ সালের আইন অনুযায়ী বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে স্বাস্থ্যসেবার সাতটি শর্ত বা নিয়ম মানতে হয়।

ডা. শামস এল আরেফিন বলেন, ‘দেশে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। এসব নিয়ন্ত্রণে আনতে বিভিন্ন সময় স্বাস্থ্য অধিদফতর অভিযান পরিচালনা করেছে। এ বিষয়টি দেখতে বেসামরিক বৈদেশিক সাহায্য প্রদানকারী সংস্থা ইউএস-এইডের সহায়তায় আমরা ১২ সিটি করপোরেশনের ১০টি জেলার ২৯টি উপজেলায় একটি গবেষণা জরিপ পরিচালনা করি। এতে স্থানীয় সিভিল সার্জনসহ কিছু বেসরকারি হাসপাতাল সহায়তা করে।’

এই সময়ে এসে সেই পরিস্থিতি পরিবর্তনও হতে পারে বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। ডা. শামস এল আরেফিন বলেন, ‘গবেষণাটি করতে গিয়ে ১১৮৯টি বেসরকারি হাসপাতালের কাছে অ্যাসেসমেন্টের (মূল্যায়ন) জন্য সহযোগিতা চাওয়া হয়। তার মধ্যে ৪০টি হাসপাতালই সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানায়। সবশেষে এক হাজার ১১৭টিতে অ্যাসেসমেন্ট করা হয়।’

শামস এল আরেফিন বলেন, ‘জরিপকৃত এক হাজার ১১৭টি বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে ৯৫৬টি হাসপাতাল কোনও এক সময় নিবন্ধনের আওতায় এসেছিল, শতকরা হিসেবে যা প্রায় ৮৬ শতাংশ। আর বাকি ১৬১টি বেসরকারি হাসপাতাল কখনই নিবন্ধন করেনি, যা শতাংশ হিসেবে ১৪ শতাংশ। কোনও একসময় নিবন্ধনের আওতায় আসা ৯৫৬টি বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে ৮৮৬টির (৭৯ শতাংশ) লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। ৬৬টি হাসপাতালের (৬ শতাংশ) বৈধ লাইসেন্স ছিল। বাকি চারটি হাসপাতাল (দশমিক ৫ শতাংশ) এ বিষয়ে কোনও তথ্য জানায়নি।