‘ঢাকায় এলাকাভেদে পানির আলাদা দাম নির্ধারণ হবে’

ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) পানিতে ভর্তুকি দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। রাজধানীতে জোনভিত্তিক (এলাকাভেদে) পানির দাম নির্ধারণ করে বস্তির নিম্ন আয়ের মানুষকে কম দামে পানি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান তিনি।

শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মিলনায়তনে সিটি রিপোর্টার্স ফোরাম (সিআরএফ) আয়োজিত ‘নগর সাংবাদিকতায় প্রশিক্ষণ কর্মশালা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা জানান।

ঢাকা শহরে বসবাসরত বেশিরভাগ মানুষই বিত্তবান বলে দাবি করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘গরিব মানুষের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় করে সেই টাকা দিয়ে ধনীদের ভর্তুকি দেওয়া নৈতিকভাবে কতটা সমর্থনযোগ্য? গুলশান-বনানীতে বসবাসকারীরা যে হারে পানির বিল দেন, বস্তিতে থাকা অথবা যাত্রাবাড়িতে থাকা মানুষ কেন সমান মূল্য পরিশোধ করবে?’

ঢাকায় পানির দাম জোনভিত্তিক আলাদা করে বাড়ানো হবে ঘোষণা দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘গুলশান-বনানীর অভিজাত এলাকায় পানির দাম বেশি থাকবে। নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাসরত এলাকায় পানির দাম অপেক্ষাকৃত কম থাকবে। তবে ঢাকা শহরে পানিতে ভর্তুকি দেওয়া হবে না।' শুধু পানি নয়, হোল্ডিং ট্যাক্স, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য ইউটিলিটিক্যাল সার্ভিসের মূল্য জোনভিত্তিক নির্ধারিত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে মানুষ ভালো আছে—এ কথা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। করোনা মহাসংকটের পর ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে বিশ্বে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাব আমাদের দেশেও পড়েছে। জ্বালানির দাম বাড়ায় খাদ্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যে কারণে মানুষ অসুবিধায় আছে। সরকার এটা অস্বীকার করছে না। বরং মানুষকে ভালো রাখার জন্য যা যা করা দরকার সরকার তার সবই করছে।’

ইউরোপসহ পৃথিবীর অনেক দেশ বর্তমানে খারাপ অবস্থায় আছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এটা না বলে সরকারের ব্যর্থতার কারণে শুধু যদি বাংলাদেশের মানুষ খারাপ আছে, এটা বলা কতটা যৌক্তিক? এটা বলে কি মানুষের কাছে ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হচ্ছে না?’

অনেক পরিশ্রমের ফলে ঢাকা মহানগরের বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) গেজেট প্রকাশ হয়েছে উল্লেখ করে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এখন বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। ঢাকাকে বাসযোগ্য, আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তুলতে এটি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।’

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে অনেক দেশের তুলনায় আমরা সফল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা এবং সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে এই সফলতা অর্জিত হয়েছে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাব মন্ত্রী বলেন, ‘ক্ষমতায় যাওয়ার মূল শক্তি হলো জনগণ। গণতান্ত্রিক দেশে রাজনৈতিক দলের আন্দোলন করার অধিকার রয়েছে। নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারও তাদের আছে। কিন্তু আন্দোলনের নামে সহিংসতা, জ্বালাও পোড়াও করবেন, আইনশৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটাবেন; রাষ্ট্র তো এটা করতে দেবে না। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব। তারা সে দায়িত্ব পালন করবেই।’