সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী আর নেই

বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী আর নেই (ইন্না...রাজিউন। রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টা ৪০ মিনিটে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। 

আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এ তথ্য নি‌শ্চিত ক‌রে‌ছেন।

গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ঢাকা সিএমএইচ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা, সালতা ও সদরপুর আংশিক) আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। তার অবস্থার ভালোর দিকে থাকায় গত ৫ সেপ্টেম্বর তাকে হাসপাতাল ত্যাগের অনুমতি দেওয়ার কথা ভাবছিলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু হঠাৎই সেদিন তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। একপর্যায়ে স্বাভাবিক জ্ঞানেও ছিলেন না তিনি।

সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা বেনজীর আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, মরহুমের মরদেহ সিএমএইচ থেকে তার নির্বাচনি এলাকা ফরিদপুরে নেওয়া হবে। সেখানে নগরকান্দা উপজেলার এম এন একাডেমি মাঠে সকাল ১১টায় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। 

তিনি বলেন, ফরিদপুর থেকে মরদেহ ঢাকায় ফিরিয়ে এনে বিকাল ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে। বাদ আছর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে মরহুমের দ্বিতীয় জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে।

সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ১৯৩৫ সালের ৮ মে মাগুরা জেলায় মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সৈয়দ শাহ হামিদ উল্লাহ ও মা সৈয়দা আছিয়া খাতুন। তিন ছেলে ও এক মেয়ের জননী সাজেদা চৌধুরীর স্বামী গোলাম আকবর চৌধুরী ২০১৫ সালে মারা গিয়েছিলেন।

১৯৫৬ সাল থেকে সাজেদা চৌধুরী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৬৯-১৯৭৫ সময়কালে তিনি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন কলকাতা গোবরা নার্সিং ক্যাম্পের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭২-১৯৭৫ সময়কালে বাংলাদেশ নারী পুনর্বাসন বোর্ডের পরিচালক, ১৯৭২-১৯৭৬ সময়কালে বাংলাদেশ গার্ল গাইডসের ন্যাশনাল কমিশনার এবং বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৮৬ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯২ সাল থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি জাতীয় সংসদের উপনেতা হন।