চিকিৎসকদের গ্রামে যেতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চিকিৎসকদের গ্রামে যেতে হবে, গ্রামের মানুষকে দেখতে হবে। রোগীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে সাধারণ মানুষ আপনাদের ওপর আস্থা রাখবে, বিশ্বাস রাখবে আর সহজেই চিকিৎসাসেবা পাবে।

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি।

চিকিৎসকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষকে সেবা করা, মানুষের পাশে দাঁড়ানো মহৎ কাজ। আমার তো মনে হয় একজন রোগী ওষুধের থেকেও চিকিৎসকের মুখের কথায় আশ্বস্ত হলে রোগ অর্ধেক ভালো হয়ে যায়। কাজেই আশ্বস্ত যাতে হয়, সেই ব্যাপারে প্রত্যেক চিকিৎসককে আন্তরিকতার সঙ্গেই দেখতে হবে। চিকিৎসকদের আরও বেশি সাধারণ মানুষের প্রতি আরও বেশি আত্মনিয়োগের অনুরোধ জানাই।

এ সময় তিনি চিকিৎসকদের চিকিৎসার পাশাপাশি গবেষণার প্রতি জোর দেওয়ার আহ্বান জানান।

করোনা ও বৈশ্বিক বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এই যে ধাক্কাটি এলো, একে তো করোনা তার ওপর যুদ্ধ, এর ফলে সামনে কিন্তু আরও কঠিন সময় আসবে, উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা-পরবর্তী সময়ে ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ স্যাংকশন পাল্টা স্যাংকশন, যে কারণে আজ বিশ্ব অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। বাংলাদেশ তার ব্যতিক্রম না। বাংলাদেশকেও খুব কঠিন সময় অতিক্রম করতে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, যেখানে উন্নত দেশগুলো নিজেদের দেশ নিয়েই হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে আমাদের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশ সেখানে স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে সার্বিক সেবা দেওয়া যে কতো কঠিন দায়িত্ব, সেটা আমরা উপলব্ধি করতে পারি।

সবাইকে মিতব্যয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এখন দেখতে পাচ্ছি যে প্রতিটি দেশেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে গেছে, জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে গেছে, বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে বলা হচ্ছে, খাদ্য কেনার ক্ষেত্রে রেশন করে দেওয়া হচ্ছে। ইউরোপ, ইংল্যান্ড, আমেরিকায় এসব অবস্থা চলছে। আমাদেরও আরও মিতব্যয়ী হতে হবে, নিজেদের দেশে উৎপাদন বাড়াতে হবে।

জ্বালানি, পানি ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দুর্ভিক্ষ হয়েছিল বিশ্বব্যাপী। এখনো সে রকম একটি আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্যই দেশের মানুষকে আমি আহ্বান করি, যার যেখানে এক ইঞ্চি জমি আছে, যে যা পারেন উৎপাদন করেন। নিজেরা কিছু করে নিজের চাহিদা মেটানোর জন্য উদ্যোগী হন। কারণ, খাদ্যনিরাপত্তা না থাকলেও তো হাজার চিকিৎসা করেও রোগী বাঁচানো যাবে না। খাদ্যনিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসেবা খুব কাছাকাছি। সে জন্য আমি বলবো জ্বালানি ব্যবহারে, পানি ব্যবহারে, বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হতে হবে, মিতব্যয়ী হতে হবে আর নিজেদের কিছু সাশ্রয় করতে হবে। নিজেদের সঞ্চয় বাড়াতে হবে। যেন যেকোনও দুঃসময় আসলে আমরা তা মোকাবিলা করতে পারি।