ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের 'বিশ্ববিদ্যালয় মেলা'

যুক্তরাষ্ট্রে লেখাপড়া করতে যাওয়ার ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪তম। বর্তমানে ৮ হাজারের বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করছেন, যাদের অনেকেই স্কলারশিপ নিয়ে গেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ঢাকায় ‘মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় মেলা’র আয়োজন করা হয়। করোনা মহামরির কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর এ বছর এই মেলা অনুষ্ঠিত হলো।

ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের এডুকেশন-ইউএসএ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ইডিপ্রোগ্রামের সহযোগিতায় শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। এদিন দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত রেনেসাঁ ঢাকা গুলশান হোটেলে এই মেলা চলে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তারা বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার জন্য  যেতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

মেলায় আসা শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় তথ্য জানার সুযোগ করে দেওয়া হয়। ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মেলায় আসার জন্য নিবন্ধন করার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। দূতাবাস জানায়,  এই মেলাটি ‘ফল ২০২২ ইডিট্যুর সাউথ এশিয়া প্রোগ্রাম’র অংশ এবং ইডিপ্রোগ্রামের একটি উদ্যোগ।

এদিন মেলায় এসে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, ‘পড়াশোনার জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গন্তব্য হলো যুক্তরাষ্ট্র। যারা ব্যাচেলর ডিগ্রি করতে যান, তাদের জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা আছে। যারা মাস্টার্স করতে চান তাদের জন্য রিসার্চের অনেক সুবিধা আছে। মেলায় অংশ নেওয়া ১৭টির পাশাপাশি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও সাপোর্ট দেওয়ার জন্য এডুকেশনইউএসএ’র টিম আছে। বাংলাদেশে ৪টি সেন্টারের মাধ্যমে এই সাপোর্ট দেওয়া হয়।’

তিনি বলেন, ‘এই মেলা মার্কিন উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশ, নেপাল ও পাকিস্তানের সম্ভাব্য স্নাতক ও স্নাতক ছাত্রদের সঙ্গে সংযোগ তৈরির সুযোগ করে দেয়। এর অংশ হিসেবে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা ঢাকাজুড়ে স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করবেন।’

মেলায় অংশ নেওয়া ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে— ডিপল ইউনিভার্সিটি, এমব্রি-রিডল অ্যারোনটিক্যাল ইউনিভার্সিটি, আইওয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি, নিউ ইয়র্ক ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি ট্যান্ডন স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং, পেস ইউনিভার্সিটি, কুইনিপিয়াক ইউনিভার্সিটি, সাভানা কলেজ অব আর্ট অ্যান্ড ডিজাইন, সিয়েনা কলেজ, স্টোনি ব্রুক ইউনিভার্সিটি, জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেলাওয়্যার, ইউনিভার্সিটি অব হিউস্টন-ভিক্টোরিয়া, ইউনিভার্সিটি অব ক্যানসাস, ইউনিভার্সিটি অব নর্দার্ন আইওয়া, ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ডাকোটা ও ওয়েস্টার্ন কেনটাকি ইউনিভার্সিটি।

মেলায় শিক্ষার্থীরা মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিষয়ক কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভর্তির প্রয়োজনীয়তা এবং বৃত্তির সুযোগ সম্পর্কে মুখোমুখি কথা বলার সুযোগ পান। তারা একটি আবেদন জমা দেওয়ার টিপসও পান। উপরন্তু, এই প্রোগ্রামটিতে এফ-১ স্টুডেন্ট ভিসা প্রক্রিয়া এবং মার্কিন উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তা এবং এডুকেশনইউএসএ’র উপদেষ্টাদের নেতৃত্বে তথ্য সেশনের বৈশিষ্ট্য থাকে।

এডুকেশনইউএসএ হলো ১৭৮টি দেশে ৪২৫টির বেশি আন্তর্জাতিক ছাত্র পরামর্শ কেন্দ্রের মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের নেটওয়ার্ক। নেটওয়ার্কটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নের সুযোগ সম্পর্কে সঠিক, ব্যাপক এবং বর্তমান তথ্য প্রদানের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থীদের মার্কিন উচ্চশিক্ষার প্রচার করে থাকে।

বাংলাদেশে এডুকেশনইউএসএ উপদেশমূলক পরিষেবা এবং রেফারেন্স সামগ্রী ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের আমেরিকান সেন্টার, ধানমন্ডিতে এডওয়ার্ড এম কেনেডি সেন্টার ফর পাবলিক সার্ভিস অ্যান্ড আর্টস এবং  চট্টগ্রামে পাওয়া যায়। এডুকেশনইউএসএ রেফারেন্স লাইব্রেরি এবং রিমোট অ্যাডভাইসিং সার্ভিসগুলো খুলনা, সিলেট এবং রাজশাহীতে আমেরিকান কর্নারের সহযোগিতায় ব্যবহারযোগ্য। এডুকেশনইউএসএ সব ধরনের পরিষেবা বিনামূল্যে দিয়ে থাকে।