‘নদী দখল ও দূষণের বিরদ্ধে সুস্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে’

নদী রক্ষার দায়িত্ব যাদের, তাদেরকে নদী দখল ও দূষণের বিরদ্ধে সুস্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে। গণমানুষের নৌপথ, অর্থাৎ শাখা নদী ও উপনদী আমরা যেন যেন ধ্বংস না করি, দূষিত ও দখল না করি— এই বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য নদী রক্ষায় কাজ করতে হবে।

রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ‘বিশ্ব নদী দিবস’ উপলক্ষে একটি নৌযাত্রা ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুড়িগঙ্গা রিভারকিপার, ক্লিন রিভার বাংলাদেশ, শিশুদের মুক্ত বায়ু সেবন সংস্থা এবং নগরবাসী পরিবেশ আন্দোলনের যৌথ আয়োজনে এই নৌযাত্রা ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনটি রাজধানীর বাবুবাজার থেকে সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হয় এবং কামরাঙ্গীরচর হয়ে বসিলা পুরান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এসে দুপুর ২টায় শেষ হয়।

অনুষ্ঠানে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক  শরীফ জামিল বলেন, ‘আমাদের গনমানুষের নৌপথ’ এই স্লোগানে আজকের বিশ্ব নদী উৎসব উদযাপন হচ্ছে। নৌপথ আগেও ছিল এখনও আছে। এখন ড্রেজিং করে নৌপথগুলো চলার উপযোগী করা হচ্ছে। এর ফলে শাখা নদী ও উপনদী ও ছোট নদী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আমরা যেন গণমানুষের নৌপথ, অর্থাৎ শাখা নদী ও উপনদী যেন ধ্বংস না করি, দূষিত ও দখল না করি, এই বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।’

বাপা, বগুড়া শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. জিয়াউর রহমান বলেন, ‘প্রতিটি জেলায় অন্তত একটি নদী সম্পূর্ণরূপে সুরক্ষণ করা গেলে, দখল-দূষণ থেকে মুক্ত করা গেলে, গত দেড়যুগ ধরে চলা নদী রক্ষা আন্দোলনের শ্রম সার্থক হবে।’

সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার আব্দুল করিম কিম বলেন, ‘এক সময় হাতেগোনা সংগঠন নদী দিবস পালন করতো। আশার কথা হলো, আজকে নদী দিবস সরকারিভাবেও পালন করা হচ্ছে। নদী রক্ষার দায়িত্ব যাদের, তাদেরকে নদী দখল ও দূষণের বিরদ্ধে সুস্পষ্ট অবস্থান হবে।’

খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল বলেন, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময় নদীপথ ছিল আমাদের সহজ ও নিরাপদ যোগাযোগ মাধ্যম। নদী হয়ে উঠেছিল তখন মানুষের নিরাপদ ঠিকানা। কিন্তু সেই ঠিকানা আজ অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। আমাদের অধিকাংশ নদনদী এখন হারিয়ে যাচ্ছে, দখল দূষণ এবং নদীর ওপর অত্যাচার-অনাচার  বেড়েই চলেছে। আমাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য নদী রক্ষা কাজ করতে হবে।’

এই নৌযাত্রা ও মানব বন্ধন অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন— ক্লিন রিভার বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী সোহাগ মহাজন, সচেতন নাগরিক সমাজের নির্বাহী পরিচালক এস এম জাহাঙ্গীর আদেল, শিশুদের মুক্ত বায়ু সেবন সংস্থার মো. সেলিম, বসিলা কমিউনিটির নেতা মো. মানিক হোসেন এবং নগরবাসী পরিবেশ আন্দোলনের চেয়ারম্যান হাজী শেখ আনসার আলী। বক্তারা নদ-নদীর অপরিকল্পিত উন্নয়ন বন্ধ করা, দখল হয়ে যাওয়া নদ-নদী ও খাল-বিল উদ্ধার করে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ অব্যাহত রাখা এবং বিশ্ব নদী দিবসে দূষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করার আহ্বান জানান।