ড্যাপ নিয়ে অসত্য তথ্য দিলে নিন্দা জানাবে রাজউক

সদ্য সুপারিশকৃত ঢাকা মহানগর বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা-ড্যাপ’র যেকোনও ধরনের গঠনমূলক সমালোচনা ও পরামর্শকে স্বাগত জানাবে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। তবে কোনও অসত্য তথ্য দিলে তার নিন্দা জানাবে রাজউক।

সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজউক থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট (আইএবি) থেকে দাবি করা হচ্ছে যে, রাজউক কর্তৃক প্রণীত ড্যাপ ২০২২-২০৩৫ এর প্রস্তাবনা বাস্তবায়িত হলে ঢাকা শহর থেকে নাকি প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষকে চলে যেতে হবে। প্রকৃত সত্য হলো— রাজউকের আওতাধীন ১৫২৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় বিবিএস ২০১১ অনুযায়ী, জনসংখ্যা ১৫ দশমিক ৫১ মিলিয়ন বা দেড় কোটি। বর্তমানে যা প্রায় দুই কোটি এবং ২০০৫ সাল পর্যন্ত প্রক্ষেপিত জনসংখ্যা ধরা হয়েছে দুই কোটি ৬০ লাখ, যা কোনোভাবেই কম তো নয়ই, বরং ৬০ লাখ অতিরিক্ত লোক ঢাকা শহরে অভিগমন করবে বা সংযোজন হবে।

রাজউক জানায়, বর্তমানে ড্যাপের সুপারিশকৃত গড় ঘনত্ব অনুযায়ী, রাজউক এলাকায় পরিণত অবস্থায় সর্বোচ্চ প্রায় ৬ কোটি ৩৬ লাখ মানুষ ধারণ করা সম্ভব হবে। সুতরাং, বিপদ অঞ্চল পরিকল্পনার প্রস্তাব অনুযায়ী, ঢাকা থেকে ৪০ শতাংশ মানুষকে বের হয়ে যেতে হবে— এ রকম তথ্য একেবারেই সত্য নয়। বরং উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সাধারণ মানুষকে উসকানি প্রদান করতে একশ্রেণির স্বার্থাধেষী মহল বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আবাসন যেমন মানুষের মৌলিক অধিকার, একইভাবে স্বাস্থ্য, সেইসঙ্গে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা ও বিকাশের জন্য অনুকূল পরিবেশও কি মানুষের মৌলিক অধিকার নয়? শুধুমাত্র বড় ইমারত নির্মাণ কি মানুষের সেই সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে ভূমিকা রাখতে পারবে বা পারছে? ২০০৮ সালের আগে ধানমন্ডি এলাকায় প্রতি বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাটের দাম ছিল প্রতি বর্গফুট ২৫০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকা। ‘ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮’ কার্যকরের পর একই জমিতে দেড় থেকে দুইগুণ ইমারত নির্মাণের পরও বর্তমানে ফ্ল্যাটের মূল্য বর্গফুট ১৫ হাজার টাকা থেকে ৩৫ হাজার টাকা, যা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। বরং বর্তমান ড্যাপে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য সুলভ আবাসনের ব্যবস্থা করার জন্যে এই প্রথম ০.৭৫ প্রণোদনা এফএআর ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেন মানুষ ক্রয় ক্ষমতার ভেতরে একটি ফ্ল্যাট কেনার সক্ষমতা অর্জন করে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়,  সরকারের উল্লেখযোগ্য সাফল্য পদ্মা ব্রিজ নির্মাণের ফলে ঢাকার দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে মানুষের অভিগমন এবং বসতি স্থাপন দ্রুততর হবে। এছাড়া সাভার-গাজীপুর অঞ্চলে শিল্প ও সংশ্লিষ্ট ভূমি ব্যবহারের কারণে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি মূল ঢাকার চেয়ে তুলনামূলক দ্রুততর হবে। ড্যাপ পুরো ঢাকা মহানগর অঞ্চলের জন্য একটি সার্বিক ও সমন্বিত মহাপরিকল্পনা। এতে শুধুমাত্র ইট কাঠের দালান এবং এফএআর নয়, বরং মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য নাগরিক সুবিধাদি, অবকাঠামোসহ নানাবিধ প্রস্তাবনা রয়েছে।