কবে যাবে বর্ষা?

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশে ঋতু বদলের চরিত্র বদলে গেছে। আগে বর্ষা বলতে বোঝাতো আষাঢ় ও শ্রাবণ মাস। তবে এখন শরৎকালেও বর্ষার আবহাওয়া পাওয়া যাচ্ছে। বর্ষার জন্য দায়ী যে মৌসুমী বায়ু তা এখনও দেশে বিরাজ করছে। এর প্রভাবে শরতেও বৃষ্টি পাচ্ছেন বাংলাদেশের মানুষ।  তবে এই মৌসুমি বায়ু চলতি মাসের মাঝামাঝি অর্থাৎ অক্টোবর মাসের ১৫ তারিখের মধ্যেই বাংলাদেশ থেকে বিদায় নেবে। আবহাওয়া অধিদফতরের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী অক্টোবরের মাঝামাঝি মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশ থেকে বিদায় নেয়। এবারও এমন পরিস্থিতিই বিরাজ করছে। এখন মৌসুমী বায়ু উপকূলের দিকে সরতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে কিছুটা ভারতের দিল্লির দিকে সরেছে। তবে পুরোপুরি যেতে অক্টোবরের মাঝামাঝি লাগতে পারে। তিনি বলেন, এরপর আকাশ পুরো পরিষ্কার হয়ে গেলেও বাংলাদেশের আবহাওয়া অনুযায়ী মাঝে মাঝে লঘুচাপ বা নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টি হতে পারে। এটাও স্বাভাবিক অবস্থা।

এদিকে আবহাওয়া অধিদফরের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়, অক্টোবর মাসে বাংলাদেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতে পারে। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এ মাসের প্রথমার্ধের মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু (বর্ষা) বাংলাদেশ থেকে বিদায় নিতে পারে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদফতর বর্তমান গুমোট আবহাওয়া পরিস্থিতির বিষয়ে জানায়, মৌসুমী বায়ুর অক্ষ পূর্ব উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত অবস্থান করছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্য এলাকায় দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।

আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়,  ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর ও মামনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়া ও বিজলি চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরণের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।

এদিকে আজ রাত ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, পাবনা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, সিলেট, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া আব্দুল মান্নান বলেন, যতদিন দেশেএ মধ্যে মৌসুমী বায়ু থাকবে ততদিন থেমে থেমে দেশেএ বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হতে থাকবে। এরপর এই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে মৌসুমী বায়ু দেশের আকাশ থেকে সরতে শুরু করবে। একইসঙ্গে কমতে থাকবে বৃষ্টির পরিমাণ।

গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে সন্দ্বীপে ৫৯ মিলিমিটার।  এছাড়া ফেনীতে ৫২, মাইজদীকোর্টে ৪২, হাতিয়া ও চট্টগ্রামে ৭, সীতাকুণ্ডে ৫, কুতুবদিয়ায় ৩,  শ্রীমঙ্গলে ২, খেপুপাড়া ও কক্সবাজারে ১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।  এছাড়া কুমিল্লা ও ভোলায় সামান্য বৃষ্টি হয়েছে বলে আবহাওয়া অধিদফতর জানায়।