রোমানিয়ায় চাকরির নামে প্রতারণা, র‍্যাবের জালে প্রতারক

যুক্ত ছিলেন না বিদেশে লোক পাঠানোর কোনও এজেন্সিতে। এমনকি চাকরিও করেনি কোনও বিদেশে লোক পাঠানোর প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু বিভিন্ন এজেন্সি এবং বিদেশি লোক পাঠানোর প্রতিষ্ঠানগুলোর বাইরে অবস্থান নিয়ে লোকজনদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলতো প্রতারক চক্রের মূল হোতা মো. মিজানুর রহমান খোকন। তার মিষ্ট কথার ফাঁদে পড়ে বিদেশ যেতে অনেকে খুইয়েছেন লাখ লাখ টাকা। রাজধানীর বনানী থেকে সোমবার (৩ অক্টোবর) তাকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে র‍্যাব।

র‍্যাব বলছে, বিদেশে লোক পাঠানোর কথা বলে উচ্চ বেতনের আশ্বাসে লোকজনদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিতো লাখ লাখ টাকা। রোমানিয়া মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে লোক পাঠানোর কথা বলে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা চুক্তি করতেন। পরে তিন থেকে চার লাখ টাকা নিয়ে চম্পট দিতো। অথচ গ্রেফতার মিজানুর রহমান কখনও কাউকে বিদেশ পাঠায়নি। গত দু’বছর ধরে বিদেশে লোক পাঠানোর কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন। বিভিন্ন এজেন্সি পরিচয় দিয়ে এ ধরনের প্রতারণা করায় ছিল তার কাজ। সরাসরি বিদেশে তার সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে, এমন কথা বলেও লোকজনদের বিশ্বাস অর্জন করতো এই প্রতারক।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত মিজানুর রহমান খোকন র‍্যাবকে জানায়, বিদেশে উচ্চ বেতন, বছরে দুটি বোনাস, থাকা খাওয়া ফ্রিসহ রেস্টুরেন্টে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রোমানিয়ায় পাঠানোর নামে প্রতারণা করে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এমন প্রতারণার বিষয়টি র‍্যাবের কাছে স্বীকারও করেছে সে। গত দুই বছরের বেশি সময় বিদেশে লোক পাঠানোর নামে প্রতারণার সঙ্গে জড়িত থাকলেও এবারই প্রথম আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছে।

বিশেষ করে নিম্ন আয় ও স্বল্প শিক্ষিতদের টার্গেট করে সখ্যতা গড়ে তুলতো। রোমানিয়ায় লোক পাঠানোর জন্য ৮ থেকে ১০ লাখ টাকায় চুক্তি করতেন। খোঁজখবর না নিয়েই বিদেশ যাওয়ার জন্য তাকে তিন থেকে চার লাখ টাকা দিয়েছেন অনেকেই। টাকা পাবার পর বিদেশ পাঠানোর নামে সময়ক্ষেপণ করতো। এক পর্যায়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিতো। 

র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রোমানিয়ায় লোক পাঠানোর কথা বলে টাকা নেওয়ার পর প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা প্রতারক মিজানুর রহমান খোকনকে গ্রেফতার করি। সে একজন প্রতারক। কাউকে কখনও বিদেশে পাঠাতে পারেনি সে। বিদেশে লোক পাঠানোর নামে লোকজনের কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়ে তাদেরকে প্রতারিত করে আসছিল। এই প্রতারক চক্রের সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।