বুয়েটে ক্ষমতার অপব্যবহার সমূলে দূর করার শপথ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) বৈষম্যমূলক অপসংস্কৃতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার সমূলে উৎপাটন করার শপথ গ্রহণ করেছেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগ কর্মীদের নির্যাতনে নিহত আবরার ফাহাদের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে শুক্রবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায়  বুয়েট অডিটোরিয়ামের সেমিনার কক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় এই শপথ নেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা।

সভায় শপথবাক্য পাঠ করান বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী সুহাস আব্দুল্লাহ। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার কল্যাণ ও নিরাপত্তার জন্য অর্পিত দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করার, বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনায় হওয়া প্রতিটি অন্যায়, অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার থাকার, বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থানকে সম্মিলিতভাবে রুখে দেওয়ার, নৈতিকতার সঙ্গে অসামঞ্জসতাপূর্ণ সব ধরনের বৈষম্যমূলক অপসংস্কৃতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার সমূলে উৎপাটিত করার শপথ গ্রহণ করেন।

সভায় আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, ‘বুয়েটের সব শিক্ষার্থীকে বাবা-মা অনেক আশা-ভরসা করে লেখাপড়ার জন্য পাঠান। সব শিক্ষার্থীই এখানে আসার আগে ভালো থাকে। কিন্তু এখানে এসে পরিবেশের বিভিন্ন  কারণে তারা খারাপ হয়ে যায়। আমরা অনুরোধ থাকবে, আমার ছেলের মতো আর কারও সঙ্গে এধরনের ঘটনা যেন না ঘটে।’

সভায় আবরার ফাহাদের সহপাঠী এস এম শিহাব বলেন, ‘একজন মা তার ছেলেকে হারিয়েছেন এই ক্যাম্পাসে, এই ছাত্র রাজনীতির জন্য। আবরার ফাহাদের ঘটনার পর প্রায় সবাই চান— ছাত্র রাজনীতি চালু না হোক। তবে কিছু শিক্ষার্থী চান চালু হোক। তাদের প্রতি আমার অনুরোধ— আপনারা এই ক্যাম্পাসে আর এটা হতে দেবেন না।’

বুয়েটের শিক্ষক মুহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, ‘আবরার ফাহাদের মৃত্যু আমাদের কাছে কাম্য নয়। আবরার ফাহাদের মৃত্যুর কারণে আমরা অনেক কিছু পেয়েছি। ছাত্র থাকা অবস্থায় আমি মনে করতাম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে নোংরা রাজনীতি ঢুকে পরেছে, তা থেকে উত্তরণ যেন ঘটে, অথবা রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী যেন বুয়েটে যে রাজনীতি ঢুকেছিল, তা  নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। আবরার ফাহাদ আমাদেরকে সেই জিনিসটি এনে দিয়েছে।’

এর আগে আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বুয়েট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বাদ আসর দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।