আইসিডিডিআর,বি বিল পাস

সামরিক আমলে জারি করা ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়া ডিজিস রিসার্চ, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) অধ্যাদেশ বাতিল করে নতুন আইন জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে।

রবিবার (৬ নভেম্বর) স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ‘আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ বিল- ২০২২’ সংসদে পাসের জন্য তোলেন। বিলটির ওপর আনা যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিস্পত্তি করেন স্পিকার। পরে বিলটি কণ্ঠ ভোটে পাস হয়।

১৯৭৮ সালে আইসিডিডিআর,বি নিয়ে অধ্যাদেশ জারি করা হয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে সামরিক শাসনামলে প্রণীত যেসব আইন বা অধ্যাদেশের এখনও প্রয়োজন রয়েছে, সেগুলোকে পরিমার্জন করে বাংলায় রূপান্তরের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে জন্য নতুন আইনটি করা হয়েছে।

উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রের বোর্ডের গঠন সম্পর্কে বিলে বলা হয়েছে, কেন্দ্রের কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের উদ্দেশ্যে একটি বোর্ড থাকবে। বোর্ডের সদস্য হবেন ১৫ জন। এরমধ্যে সরকার মনোনীত প্রতিনিধি থাকবেন চার জন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনোনীত প্রতিনিধি একজন, সরকার নির্ধারিত জাতি সংঘের কোনও সংস্থার মনোনীত একজন, পূর্ববর্তী বোর্ডের মনোনীত ৮ জন এবং কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক। নির্বাহী পরিচালক এই বোর্ডের সদস্য সচিব হিসেবেও কাজ করবেন।

বিলে বলা হয়, আইসিডিডিআর,বি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক আইন ও বিধিবিধান সাপেক্ষে বৈধ জৈব উপকরণ এবং গবেষণা সংক্রান্ত ফার্মাসিউটিক্যাল দেশের ভেতরে আনতে এবং দেশের বাইরে হস্তান্তর করতে পারবে। তবে কোনও নিষিদ্ধ পণ্য গবেষণা বা পরীক্ষার জন্য বিদেশে পাঠাতে হলে বা কোনও আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য গবেষণা বা পরীক্ষার জন্য বিদেশ থেকে আমদানি করতে হলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তি গ্রহণ সাপেক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে।

বিলের আলোচনায় বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, ‘আগে রাষ্ট্রের রোগব্যাধি নিরাময় করতে হবে। রাষ্ট্রের অঙ্গে অঙ্গে রোগ ব্যাধি। রাষ্ট্রের কোথায় ভেজাল নাই? খাদ্যে ভেজাল, ওষুধে ভেজাল, বাতাসে ভেজাল, সরকারের প্রতিটি অঙ্গে অঙ্গে ভেজাল। এই জায়গাগুলো যদি ঠিক করতে না পারি, তাহলে আইন প্রণয়ন করে কিচ্ছু লাভ হবে না।’

‘দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে খেলা’, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যে ইঙ্গিত করে হারুন বলেন, ‘বরিশালে দেখলাম, (বিএনপি গণসমাবেশ) রাস্তায় গাড়ি নিয়ে যাচ্ছে, সেগুলো ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কোথায়? তারা কী করছে? তাদের দায়িত্ব কী? কর্তব্য কী?’

গত ১৫ বছরে সরকার বহু হাসপাতালের অবকাঠামো তৈরি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২৫০ বেডের হাসপাতালে আইসিইউ নাই। স্বাস্থ্য খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সেখানে বেহাল হাসপাতাল।’

বিএনপির হারুনুর রশীদের বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে জাতীয় পার্টির সংসদ মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘আসলেই কোনও কিছুই ঠিক নাই।’

রাজনীতিতে সাস্প্রতিক আলোচিত বিষয় ‘খেলা হবে’ এর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপির যে কী খেলা হবে, জানি না। এই দুটি দল লাখ লাখ কোটি কোটি টাকা খরচ করে জনসমাবেশ করে দেখাতে চায়— মানুষের কিসে কল্যাণ ও প্রয়োজন, এটা তারা চিন্তা করে না।’

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘বিএনপি ও আওয়ামী লীগের যে কী খেলা হবে? মানুষ আতঙ্কে আছে, আগামী একবছরে যে কী হবে? আমরা চাই, এই সব খেলা না, তারা মানুষের কল্যাণে কাজ করুক। গণতন্ত্রের প্রতি আনুগত্যে কাজ করুক। শোডাউন করে মানুষকে আতঙ্কিত করার কোনও যুক্তি নাই। যেটা আওয়ামী লীগ ও বিএনপি করছে।’