যুবলীগের সমাবেশে নিরাপত্তা দেবে সাড়ে তিন হাজার পুলিশ সদস্য

টানা তিনবার ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সমাবেশ শুক্রবার (১১ নভেম্বর)। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিতব্য এই সমাবেশকে ঘিরে কঠিন নিরাপত্তাবলয় তৈরি করেছ ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। সমাবেশে নিরাপত্তার বিষয়ে এক চুলও ছাড় দিতে রাজি নয় পুলিশ। তাই এবার ডিএমপির পক্ষ থেকে ২৯ পয়েন্টে ৩ হাজার ৫০০ পোশাকধারী প্রোটেকশন ফোর্স থাকছে নিরাপত্তায়। এর বাইরে অন্যান্য ফোর্স তো আছেই।

বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ, বোম ডিসপোজাল ইউনিট, র‌্যাব, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে।

যেহেতু সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা; সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে। ইতোমধ্যে যুব সমাবেশকে কেন্দ্র করে প্রস্তুত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। যেখানে অন্তত ১০ লাখ লোক জড়ো করার ঘোষণা দিয়েছে যুবলীগ।

এই কর্মকর্তা বলেন, সমাবেশকে ঘিরে সারাদেশ থেকে যুবলীগের নেতাকর্মীরা আসবে ঢাকায়। এতে রাজধানীতে বাইরের লোকের সংখ্যা যেমন বাড়বে, তেমন নিরাপত্তার বিষয়টিও আছে। এসব দিক বিবেচনা করে শুধু সমাবেশের বাইরে ২৯টি পয়েন্ট ও নয়টি প্রবেশ গেটে প্রোটেকশনের জন্য ২ হাজার ৫১৭ জন পোশাকধারী পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। আর সমাবেশের ভেতরের বিভিন্ন পয়েন্টে প্রোটেকশনের জন্য ৯৮৩ জন পোশাকধারী সদস্য মোতায়েন করা হবে। আর অন্যান্য ফোর্স থাকবেই।

প্রতি পয়েন্টে টিম লিডার হিসাবে থাকবেন একজন অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি)। তার নেতৃত্বে এসি, পরিদর্শকসহ থাকবে একটি ফোর্স। এছাড়া নয়টি গেটেও পর্যাপ্ত সংখ্যক পোশাকধারী পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। তাছাড়া প্রবেশ গেটে পুলিশ ছাড়াও অন্যান্য গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন।

ডিএমপি রমনা ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. জয়নুল আবেদীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, নগরবাসীকে চলাচলে যেন কোনও ভোগান্তি পোহাতে না হয়, সে জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ট্রাফিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ট্রাফিক ব্যবস্থাও নতুন করে ঠিক করা হয়েছে।

ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. শহিদুল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সমাবেশের নিরাপত্তায় কোনও কমতি নেই। আমাদের পক্ষ থেকে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সমাবেশকে ঘিরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সমাবেশকে ঘিরে র‌্যাবের সব ইউনিটকে সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে। এছাড়া কোনও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য র‌্যাবের স্পেশাল ইউনিট, ডগ স্কোয়াড, হেলিকপ্টার ইউনিটসহ সশস্ত্র ইউনিটকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, র‌্যাবের ঢাকার বাইরের ইউনিটগুলোকে সতর্ক রাখা হয়েছে। আর ঢাকার ভেতরের ইউনিটগুলো সার্বক্ষণিক সমাবেশের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও সাইবার জগতে মনিটরিং শুরু করা হয়েছে। যাতে কেউ উসকানিমূলক কোনও কিছু ছড়াতে না পারে, সেই দিকে নজর রাখা হচ্ছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) এ কে এম হাফিজ আক্তার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রোগ্রামের জন্য সব সময় বাড়তি নিরাপত্তা থাকে। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের জন্য এক থেকে দেড় হাজার সদস্য নিরাপত্তায় থাকে। সমাবেশকে ঘিরেও নিরাপত্তা থাকছে।