বুড়িগঙ্গা থেকে তরুণের লাশ উদ্ধার: আরেকজন গ্রেফতার

রাজধানীর কেরানীগঞ্জ এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীতে চাঞ্চল্যকর সাকিব (২০) নামে এক তরুণের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় অভিযুক্ত একজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-২। সাকিব পেশায় পিকআপ চালক ছিলেন।

র‌্যাব জানিয়েছে, গ্রেফতার অভিযুক্ত হলো মো. নাইমুল হোসেন ওরফে সিয়াম (২২)।

জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত মো. মিজানুর রহমানকে গত ২ ডিসেম্বর গ্রেফতার করে র‌্যাব-২। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে। এরপর মো. মিজানুর রহমানের দেওয়া তথ্যে গত ৩ ডিসেম্বর আরেক অজ্ঞাত আসামি রাজধানীর কামরাঙ্গীচর এলাকায় অবস্থান করছে। এর ভিত্তিতে র‌্যাব-২ এর আভিযানিক দলটি রাজধানীর কামরাঙ্গীচর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে নাইমুল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব ২ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. ফজলুল হক রবিবার (৪ ডিসেম্বর) বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা গেছে, গ্রেফতার নাইমুল একটি কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানিতে চাকরি করতো। ২ মাস আগে তার চাকরি চলে যায়। এরপর থেকে সে বিভিন্ন জায়গায় চুরি ও ছিনতাই করতো। এই ছিনতাইয়ের টাকার তার সংসার চলছিল না। তখন সে মো. মিজানুর রহমান ও তাদের আরেক বন্ধুর সঙ্গে মিলে একটি গাড়ি ছিনতাই করার প্ল্যান করে। সেই গাড়ি গ্রামে বিক্রি করে যে টাকা আসবে সেই টাকা দিয়ে তারা একটি ব্যবসা করারও পরিকল্পনা করে। 

পরবর্তী সময়ে তারা রায়ের বাজার যায় এবং একটি গাড়ি ভাড়া করে ৫০০ টাকা অগ্রিম দিয়ে চলে আসে। পরেরদিন তারা প্ল্যান মাফিক গাড়ির ড্রাইভার সাকিবকে মোবাইলে কল করে আরশিনগর আসতে বলে। গাড়ির ড্রাইভার সাকিব সেখানে গেলে তারা বলে আমরা মুন্সীগঞ্জ যাবো। সাকিব মুন্সিগঞ্জ যেতে রাজি না হলে তারা তাদের রুমে ডেকে নিয়ে যায়। রুমে নিয়ে যাওয়ার পর কথাকাটাকাটির এক পর্যায় তারা সাকিবের হাত-পা বেঁধে ফেলে এবং কালো কসটেপ দিয়ে তার মুখ ও মাথা পেচিয়ে ফেলে। এরপর রাত ১২টার দিকে তারা নদীর দিকে নিয়ে গিয়ে নদীতে ফেলে দেয়। পরবর্তী সময়ে পিকআপ ড্রাইভার সাকিবের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। আটককৃত আসামির দেওয়া তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিকে গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে। 

৬ নভেম্বর রাজধানীর কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন বুড়িগঙ্গা নদীর আটিবাজারগামী শাখা নদীর পার হতে হাত-পা বাঁধা ও মুখমন্ডল কস্টেপ পেচানো অবস্থায় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তী সময়ে মরদেহটি পিকআপ চালক সাকিবের বলে শনাক্ত করে তার চাচা। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভিকটিমের চাচা মো. জামাল (৩৭) অজ্ঞাতনামা আসামিদের আসামি করে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।