আজ বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস

বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস আজ সোমবার (৫ ডিসেম্বর)। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালিত হবে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘মাটি: খাদ্যের সূচনা যেখানে’। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, নদীমাতৃক এবং কৃষিনির্ভর সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সংস্কৃতি মূলত কৃষি ও মাটি কেন্দ্রিক। আয়তনে ছোট, ঘনবসতি ও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার দেশ হওয়ার পাশাপাশি নানাবিধ প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ আজ দানাদার খাদ্যে উদ্বৃত্ত দেশ হিসেবে সুনাম অর্জন করেছে। এর মূল কারণ হলো আমাদের দেশের সোনাফলা উর্বর মাটি এবং কৃষকের অক্লান্ত পরিশ্রম। আর তাই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন টেকসই মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনা, চাষের জমির উপযুক্ত ব্যবহার এবং অতিমাত্রায় সার ও কীটনাশকের ব্যবহার থেকে বিরত থাকা। 

তিনি বলেন, ‘সরকার তৃণমূল পর্যায়ে মৃত্তিকা পরীক্ষা ও সার সুপারিশ সেবা প্রদান এবং রাসায়নিক সারের সুষম ব্যবহারের পাশাপাশি জৈব সার ব্যবহারে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে জেলা পর্যায়ে ভ্রাম্যমান ও স্থায়ী গবেষণাগার স্থাপন করেছে।’

শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন সমবায় ভিত্তিতে চাষাবাদ হচ্ছে, যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে কৃষি বাণিজ্যিকীকরণ করা হচ্ছে। সারসহ কৃষিতে দেওয়া হচ্ছে বিপুল পরিমাণ আর্থিক উন্নয়ন সহায়তা। পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের জন্য নেয়া হয়েছে নানা প্রকল্প। এ সকল কার্যক্রমের সাফল্য নির্ভর করবে মাটির সুস্বাস্থ্যের ওপর। যেহেতু ক্রমাগতভাবে আমাদের জনসংখ্যা বাড়ছে এবং আবাদি জমির পরিমাণ কমছে, তাই উন্নত জাত ও ফসল নিবিড়তা বৃদ্ধির মাধ্যমে অধিক খাদ্য উৎপাদনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘মাটির প্রতি যত্নশীল না হলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। মাটির উর্বরতা ও উৎপাদনশীলতা বজায় রেখে অধিক ফসল উৎপাদন করতে হবে। মাটিতে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহার পরিহার করে সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগের মাধ্যমে মাটির সুস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষা করতে হবে।’

উদ্ভিদের জন্ম-বৃদ্ধিতে ও মানবকল্যাণে মৃত্তিকার গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিতেই বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস নির্ধারণ করা হয়েছে। মৃত্তিকার সঠিক পরিচর্যার গুরুত্ব বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য মৃত্তিকা বিজ্ঞানের আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন (আইইউএসএস) ২০০২ সালে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস পালনের প্রস্তাব উত্থাপন করে। পরে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য সংস্থার অনুমোদন লাভের পর প্রতিবছর ৫ ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী দিবসটি উদযাপিত হয়।

বিশ্বের প্রায় ৬০ হাজারের বেশি মৃত্তিকাবিজ্ঞানী এ দিবসটি সাড়ম্বরে পালন করে থাকেন। মৃত্তিকা সম্পর্কিত জ্ঞান বৃদ্ধি এবং তার প্রচার ও প্রসারের দায়িত্ব এই বিজ্ঞানীদের। বিশ্বের সব দেশে সুস্থ মৃত্তিকার সুফল উৎসাহিত করতেই এ দিবসের আয়োজন করা হচ্ছে। খবর বাসস।