দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৩৯ শতাংশ, স্মার্টফোন ৩১

তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশ যথেষ্ট ঘটলেও দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা তেমন একটা বৃদ্ধি পায়নি। সম্প্রতি বিবিএসের (বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো) জরিপ অনুসারে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে ৩৮ দশমিক ৯ শতাংশ। মূলত ব্যয়বহুল এবং অপ্রয়োজনীয় মনে করার কারণে এর ব্যবহার কম বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া উৎপাদনশীল কাজে মানুষের প্রযুক্তির দিক দিয়ে দক্ষতা যথেষ্ট কম। আর এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে আছে দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষ।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও আইসিটি বিভাগের জরিপ থেকে আরও জানা যায়, বর্তমানে ব্যক্তিপর্যায়ে মোবাইলের ব্যবহার ৮৯.৯ শতাংশ, এর মধ্যে স্মার্টফোনের ব্যবহার করেন ৩০ দশমিক ৯ শতাংশ। গৃহস্থালি পর্যায়ে মোবাইলের ব্যবহার ৫২ দশমিক ২ শতাংশ।

ব্যক্তি পর্যায়ে কম্পিউটার ব্যবহারকারী ৭ দশমিক ৪ শতাংশ, তাদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ১ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারে অনাগ্রহী। তাদের মধ্যে ৬১ দশমিক ৮ শতাংশের নিজের মোবাইল আছে, প্রোগ্রামিং বা কোডিং জানে ১ দশমিক ৪ শতাংশ লোকজন।

এই তথ্য সংগ্রহে ৩০ হাজার ৮১৬টি খানা এবং এক লাখ বারো হাজার ৬০০ মানুষের ওপর জরিপ চালিয়েছে সরকারি এই সংস্থা। জরিপের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, দেশে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বাড়লেও কম্পিউটারের ব্যবহার তেমন বাড়েনি। আইসিটি ব্যবহারে গত দশ বছরে ব্যক্তিপর্যায়ে মোবাইলফোন ব্যবহার বেড়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ আর কম্পিউটার ব্যবহার বেড়েছে ১‌ দশমিক ৮ শতাংশ মাত্র। এক্ষেত্রে গৃহস্থালী পর্যায়ে আইসিটির ব্যবহার ব্যক্তিপর্যায়ের মতোই। আর পরিবারভিত্তিক স্মার্টফোন আর কম্পিউটারের ব্যবহার বেশি।

জরিপের তথ্যানুযায়ী, দিনে অন্তত একবার মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারী পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা বেশি। এছাড়া মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারে শহরের মানুষ এগিয়ে রয়েছে। অবশ্য মোবইল ব্যবহারে শহর আর গ্রামের পার্থক্য খুব বেশি নয়। নিজের বাসায় ইন্টারনেট ব্যবহারের হার বেশি।

বিবিএসের জরিপ অনুযায়ী, স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের ৪১ শতাংশ ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী। এসডিজি অনুযায়ী আইসিটি দক্ষতার ক্ষেত্রে ৮৬ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ কপি-পেস্ট এবং ডিজিটাল কনটেন্ট ও তথ্য ব্যবহার করতে পারে। ৮৩ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ মেসেজ পাঠাতে পারে। প্রোগ্রামিং ও কোডিংয়ে মানুষের দক্ষতা অনেক বেশি পিছিয়ে রয়েছে।

বিবিএসের জরিপ অনুযায়ী গ্রামের ৬৪ শতাংশ এবং শহরের ৫৮ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রয়োজন মনে করে না।  ৪৮.২ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেটকে ব্যয়বহুল মনে করে। আর ৩৫ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহারের উপকরণকে ব্যয়বহুল মনে করে।

সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী বিভাগে ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ পরিবারে ইন্টারনেট এবং ৩২ শতাংশ স্মার্টফোন ব্যবহার করা হয়। রংপুরে ৩৪.৮ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। কম্পিউটার, ইন্টারনেট, মোবাইল ও স্মার্টফোন ব্যবহারে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে ঢাকা। আর কম্পিউটার ব্যবহারে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে বরিশাল মাত্র ৪ শতাংশ। তবে সার্কভুক্ত দেশের তুলনায় বাংলাদেশ কততম অবস্থানে রয়েছে এই বিষয়ক কোনও তথ্য জানা যায়নি।