শিক্ষাখাতে প্রতিমন্ত্রীর ক্ষমতার অপব্যবহারে জবাবদিহির দাবি টিআইবির

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ছেলের বৌভাতে কুড়িগ্রামের তিন উপজেলার ২৬৫ বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে শিক্ষকদের যোগদান, বাধ্যতামূলক জনপ্রতি ৫০০ টাকা চাঁদা তুলে সোনার আংটি, রেফ্রিজারেটর, ওয়াশিং মেশিন উপহার দেওয়া এবং প্রতিমন্ত্রী তা গ্রহণের ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক উল্লেখ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

একইসঙ্গে প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশনামূলক নিমন্ত্রণ এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের যোগসাজসে বিদ্যালয় বন্ধ রেখে বৌভাতে উৎসাহ নিয়ে কিংবা বাধ্য হয়ে অংশগ্রহণের ঘটনা দেশের শিক্ষাখাতকে দলীয়করণ ও ক্ষমতার অপব্যবহার বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এমন দৃষ্টান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রতিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে টিআইবি। মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমন দাবি জানায় সংস্থাটি।

গণমাধ্যমের সূত্র দিয়ে টিআইবির বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রবিবার (৮ জানুয়ারি) কুড়িগ্রামের চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজিবপুর উপজেলার সব বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে শিক্ষকরা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ছেলের বৌভাতে অংশ নেন। প্রতিমন্ত্রী, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের শিক্ষাব্যবস্থা, শিক্ষকতা পেশা ও শিক্ষার্থীর প্রতি নৈতিক দায়বদ্ধতার লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় বিকশিত দলীয়করণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের হাতে জিম্মি অবস্থার চরম উদ্বেগজনক দৃষ্টান্ত কুড়িগ্রামের এই ঘটনা। প্রতিমন্ত্রী,সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষকবৃন্দের কেউ এর দায় এড়াতে পারেন না।’

টিআইবি মনে করে, প্রধান শিক্ষকরা নিজেদের তিনদিন সংরক্ষিত ছুটির সুযোগ নিয়ে ব্যক্তিগত আমন্ত্রণের বিষয়টিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেন। কিন্তু বিশেষ পরিস্থিতির জন্য সংরক্ষিত এই ছুটি এ ধরনের অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহারের সুযোগ আছে কি-না সে বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট ব্যাখার প্রয়োজন রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘এতোগুলো বিদ্যালয় বন্ধ করে কারও ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ ও বাধ্যতামূলক জনপ্রতি ৫০০ টাকা চাঁদা সংগ্রহ করে উপহার প্রদানের এই ঘটনা জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের যোগসাজস না থাকলে কোনও অবস্থাতেই ঘটতে পারতো না। যা সহজেই বোধগম্য। প্রতিমন্ত্রী ও তার পরিবার এই উপহার গ্রহণ করে যে ন্যাক্কারজনক মানসিকতার পরিচয় দিলেন,তার ব্যাখা কি? আর এই পুরো ঘটনার জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা না হলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ভবিষ্যত-ই বা কি? সরকারের উচিত জনগণের, বিশেষ করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জ্ঞাতার্থে তা ব্যাখাসহ প্রকাশ করা।’