প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য প্রাথমিকে ১১৪টি পদ সংরক্ষণের নির্দেশ

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে ২০২০ সালের নিয়োগ পরীক্ষায় ১১৪টি পদ সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রিটকারী প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ না দেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা পূরণ করে রিটকারী প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

চার সপ্তাহের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সচিব ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালককে (ডিজি) এসব রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। তাকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী মো. শরিফুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

পরে রিটকারীদের আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলার ১১৪ জন প্রার্থী রিটটি দায়ের করেন। রিটকারীরা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী প্রতিবন্ধী কোটায় নিয়োগের জন্য আবেদন করেন। পরবর্তীতে তারা লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সফলভাবে উত্তীর্ণ হন এবং মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন। এরপর গত ১৪ ডিসেম্বর নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়। যেখানে কোনও প্রতিবন্ধী প্রার্থীকে সুযোগ দেওয়া হয়নি।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯-এর ৮ এর ২ বিধিতে বলা হয়েছে ‘উপ-বিধি (২)-এর দফা (গ) তে উল্লেখিত মহিলা, পোষ্য ও পুরুষ কোটা পূরণের ক্ষেত্রে, আপাতত বলবৎ অন্য কোনও বিধি বা সরকারি সিদ্ধান্তে কোনও বিশেষ শ্রেণির কোটা নির্ধারিত থাকলে ওই কোটা সংক্রান্ত বিধান অনুযায়ী নিয়োগ করতে হবে।’ আরও বলা আছে, ’প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩-এর ধারা ৩৫-এর ১-এ বলা হয়েছে, আপাতত বলবৎ অন্য কোনও আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও, প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী, উপযোগী কোনও কর্মে নিযুক্ত হতে কোনও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে বঞ্চিত বা তার প্রতি বৈষম্য করা বা তাকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না।’ দেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৮-এর ৪ ধারা অনুসারে রিটকারীরা ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়ার অধিকারী। কিন্তু চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের সময় ওই বিধি অনুসরণ করা হয়নি।

এ কারণে দেশের বিভিন্ন জেলার ১১৪ জন প্রতিবন্ধী প্রার্থী গত ১৫ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। সেই রিটের শুনানি শেষে আদালত ১১৪টি সহকারী প্রাথমিক শিক্ষকের পদ সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়ে রুল জারি করলেন।