বাংলা একাডেমির ওপর ‘আমলাতান্ত্রিক হস্তক্ষেপে’ লেখক-শিল্পীদের উদ্বেগ

বাংলা একাডেমির অভ্যন্তরীণ কোনও বিষয়ে ‘আমলাতান্ত্রিক হস্তক্ষেপ’ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন দেশের খ্যাতিমান লেখক ও শিল্পীরা। তারা বলেছেন, শিল্প-সাহিত্যে আমলাতান্ত্রিক হস্তক্ষেপ চলবে না। আমরা চাই, ইতিহাস-ঐতিহ্যবাহী বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত বাংলা একাডেমির মর্যাদা অক্ষুণ্ণ থাকুক।

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) উদ্বিগ্ন লেখক-শিল্পীদের পক্ষে বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন কবি শাহেদ কায়েস।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘২০১৩ সালে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে পাসকৃত ‘বাংলা একাডেমি আইনের ৩’ এর ২ ধারা মোতাবেক বাংলা একাডেমি একটি সংবিধিবদ্ধ স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করবে কার্যনির্বাহী পরিষদ। এই পরিষদে সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের একজন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন সদস্য থাকবেন। এছাড়া থাকবেন একাডেমির মহাপরিচালকসহ শিক্ষা-শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি জগতের অন্য সদস্যরা। কোনও সিদ্ধান্ত নিতে হলে তারাই নেবেন।’

বিবৃতিতে আরও  বলা হয়, কোনও অবস্থাতেই সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব একাডেমির অভ্যন্তরীণ কোও বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন না। আমরা সংবাদমাধ্যম সূত্রে জেনেছি, সম্প্রতি সংস্কৃতি সচিব মো. আবুল মনসুর বাংলা একাডেমিতে গিয়ে একাডেমির কর্মকর্তাদের হুমকি-ধমকি দিয়েছেন, বইমেলাকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে নিতে চেয়েছেন। একাডেমির কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন— ‘কীসের স্বায়ত্তশাসন! আপনারা সবাই মন্ত্রণালয়ের অধীন। আপনারা যদি সের হন, মন্ত্রণালয় সোয়া সের।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সচিবের এই অসৌজন্যমূলক আচরণে আমরা স্তম্ভিত, মর্মাহত। সচিব কার্যত জাতীয় সংসদে পাসকৃত আইন লঙ্ঘন করেছেন। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে এই সচিবকে অপসারণ করা হোক। শিল্প-সাহিত্যে আমলাতান্ত্রিক হস্তক্ষেপ চলবে না। আমরা চাই না, ভবিষ্যতে বাংলা একাডেমির অভ্যন্তরীণ কোনও বিষয়ে আমলাতান্ত্রিক হস্তক্ষেপ হোক। আমরা চাই, ইতিহাস-ঐতিহ্যবাহী, বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত বাংলা একাডেমির মর্যাদা অক্ষুণ্ণ থাকুক।’

বিবৃতিদাতা উদ্বিগ্ন লেখক ও শিল্পীদের মধ্যে রয়েছেন— নাট্যকার, অভিনেতা ও নাট্য পরিচালক মামুনুর রশীদ; মুক্তিযোদ্ধা, মঞ্চনাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু; কবি শামীম আজাদ; কবি ও প্রবন্ধিক হাফিজ রশিদ খান; কবি ফেরদৌস নাহার; কবি খালেদ হোসাইন; কবি শামীম রেজা; কবি শোয়াইব জিবরান; কথাসাহিত্যিক রাজীন নূর; কবি হেনরী স্বপন; কবি শামীম শাহান; কবি শাহেদ কায়েস; কবি কাজল কানন; কবি আহমেদ শিপলু; কবি সাকিরা পারভীন; কবি অতনু তিয়াস; কবি অরবিন্দ চক্রবর্তী; কথাসাহিত্যিক হামিম কামাল; কবি মীর রবি; কবি শরাফত হোসেন; প্রাবন্ধিক লোপা মমতাজ; কবি শারমিনুর নাহার; গল্পকার হাবিবুল্লাহ ফাহাদ; কবি ও গবেষক হাসান হামিদ।