পাঠ্যপুস্তক সংশোধন নয়, বাতিলের দাবি চরমোনাই পীরের

মাধ্যমিকের পাঠ্যপুস্তক সংশোধন নয়, বাতিলের দাবি তুলেছেন চরমোনাই পীর ও ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘দাবি আদায়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দেশের সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক ধারাবাহিক আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাবে। দাবি আদায়ে ২ দফা কর্মসূচিও ঘোষণা করেন তিনি।

রবিবার (২৯ জানুয়ারি) দলীয় কার্যালয়ে শিক্ষা সিলেবাসের অসঙ্গতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা ও দাবি জানান তিনি। 

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ৩ ফেব্রয়ারি শুক্রবার সারা দেশে প্রতিটি জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল। ১০ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সুশীল সমাজের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠক।

সংবাদ সম্মেলনে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনে করে, বই সংশোধন নয়, বরং বাতিল করতে হবে এবং সত্যনিষ্ঠ শিক্ষাবিদ ও ওলামাদের সমন্বয়ে নতুন করে বই লিখতে হবে। একই সঙ্গে এই বই রচনার সঙ্গে জড়িতদের ভিন্ন কোনও রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি আছে কিনা তা খুঁজে বের করতে হবে এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’

বিজ্ঞানের নামে বিজ্ঞান অসমর্থিত বিষয় পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এই অঞ্চলের ইতিহাসের একটি ভুল ও মিথ্যা বর্ণনা দেওয়া হয়েছে যার ভিত্তি আমাদের কাছে মনে হয়েছে ধর্ম নিরপেক্ষতার আড়ালে হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক এজেন্ডা।’

অসঙ্গতি প্রসঙ্গে চরমোনাই পীর বলেন, ‘বিভিন্ন বই বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, পাতায় পাতায় ইংরেজি ও বাংলা বানানে ভুল, শাব্দিক অর্থে ভুল, ইতিহাসের তথ্যে ভুল, বঙ্গবন্ধুর পিতার নামে ভুল। এ সমস্ত ভুলে ভরা পাঠ্যবই শিশুদের পাঠদান করা হলে শিশুরা ভুল শিখবে। আমরা আরও উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, বইয়ের বিভিন্ন গল্পের উদাহরণে যেসব চরিত্র ব্যবহার করা হয়েছে তাদের অধিকাংশের নামে দেশীয় ছাপ নেই বরং সুকৌশলে পাশ্চাত্য এবং ভারতীয় বিভিন্ন নাম ব্যবহার করে সাংস্কৃতিক অগ্রাসন চালানো হয়েছে।’

মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘২০২৩ এর মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তকে জনগণের বোধ-বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও জাতীয় স্বার্থকে উপেক্ষা করে সাম্প্রদায়িক উসকানি, তথ্য ও ইতিহাস বিকৃতি, বিতর্কিত ও অবৈজ্ঞানিক মানব সৃষ্টিতত্ত্ব অনুপ্রবেশ, ট্রান্সজেন্ডার, পৌত্তলিক ও ব্রাক্ষণ্যবাদী সংস্কৃতির আধিপত্য, ইসলামকে ভিনদেশি সাব্যস্ত করা এবং প্লেজারিজমের মতো নিন্দনীয় কাজের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে; যা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য উদ্বেগ ও হতাশার।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মুহাম্মাদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, সহকারী মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম আতিকুর রহমান, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম প্রমুখ।