‘শব্দদূষণে ডিএমপি ট্রাফিকের ১২ শতাংশ সদস্যের শ্রবণশক্তির ক্ষতি’

পেশাগত দায়িত্বে থাকা ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের ১১ দশমিক ৮ শতাংশ সদস্যের শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৩৩ দশমিক ৯ শতাংশের অন্যদের কথা শুনতে কষ্ট হয়। শব্দদূষণসহ পরিবেশদূষণ রোধে আমাদের দেশে পর্যাপ্ত আইন রয়েছে, তবে আইনের প্রয়োগ হোক সর্বশেষ পদক্ষেপ এবং সচেতনতাই হোক সর্বপ্রথম পদক্ষেপ।

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের অডিটোরিয়াম কক্ষে পরিবেশ অধিদফতরের 'শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারত্বমূলক প্রকল্প'-এর আওতায় গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারদের নিয়ে একটি সচেতনতামূলক মতবিনিময় সভায় এই তথ্য জানান স্টামফোর্ড বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার।

পরিবেশ অধিদফতর, সদর-এর উপ-পরিচালক (প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা) বেগম ফারহানা মুস্তারীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. সোহেল রানা, জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের চিফ কার্ডিওলজি কনসালটেন্ট ডা. এম এ বাকি, বুয়েটের সহকারী অধ্যাপক কাজী মো. সাইফুন নেওয়াজ; স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ডা. আমজাদ হোসেন। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন প্রকল্পের মাঠ সমন্বয়ক মো. নাছির আহম্মেদ পাটোয়ারী।

ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. সোহেল রানা বলেন, শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে, যানবাহনের সৃষ্ট শব্দদূষণের প্রত্যক্ষ শিকার ট্রাফিক পুলিশ ও পথচারীরা। শব্দ দূষণরোধে যানবাহন এবং নির্মাণ কাজে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

ফারহানা মুস্তারী বলেন, পরিবেশ অধিদফতর শুরু থেকেই শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে সমন্বিত ও অংশীদারত্বমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করে আসছে। এই প্রকল্পের অধীনে পরিবেশ অধিদফতর নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আসছে, শব্দদূষণ রোধে পুলিশ প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা একান্তই কাম্য।

ডা. এম এ বাকি বলেন, "শব্দদূষণ একটি নীরব ঘাতক” এটি পথচারী ও সড়কে কর্মরত ট্রাফিক কন্ট্রোলে নিয়োজিত ব্যক্তিদের মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা সৃষ্টি করছে। শব্দদূষণ কানের সমস্যার পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, হার্টের রক্তনালী ব্লক, ডায়াবেটিস ও কোলেস্টেরল বাড়াতেও প্রভাব রাখে। জনস্বাস্থ্যের এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো জনসচেতনতার জন্য আরও অধিকতরভাবে গণমাধ্যমে প্রচার করা উচিত এবং জনস্বাস্থ্যের দিকে নজর রেখে শব্দদূষণ প্রতিরোধে সমন্বিত ব্যবস্থা নিতে হবে।

অন্যদের মধ্যে মতবিনিময় সভায় ট্রাফিকপুলিশ ও গাড়িচালকরা শব্দদূষণ নিয়ে তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, সংকট ও সমাধানের উপায় নিয়ে মতপ্রকাশ করেন।