রোমান্টিক ও রাজনৈতিক উপন্যাসের চাহিদা বেশি

বইমেলায় পাঠকের পছন্দের শীর্ষে উপন্যাস, তাই বিক্রিও বেশি। তবে প্রকারভেদে রয়েছে বিক্রির পার্থক্য। রোমান্টিক ও রাজনৈতিক উপন্যাসের পরেই ঐতিহাসিক উপন্যাসের চাহিদা বেশি। বিক্রির হিসাবে এগিয়ে রোমান্টিক ধারার উপন্যাস। সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বইমেলার বিভিন্ন স্টল-প্যাভিলিয়ন ঘুরে জানা যায় এমন তথ্য।

বিক্রয়কর্মী ও প্রকাশকরা জানান, সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে উপন্যাস। সবচেয়ে বেশি চাহিদা রোমান্টিক উপন্যাসের। রোমান্টিক উপন্যাসের মধ্যে হুমায়ুন আহমেদের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও নতুন প্রজন্মের লেখক সাদাত হোসাইন, মৌরি মরিয়মের বইয়ের চাহিদা রয়েছে। হুমায়ুন আজাদ, সৈয়দ শামসুল হকের উপন্যাসের কাটতিও কম নয়।IMG_20230213_182742

অন্যপ্রকাশের স্টল ইনচার্জ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, উপন্যাসই বেশি বিক্রি হচ্ছে। এরমধ্যে রোমান্টিক ও রাজনৈতিক উপন্যাসের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। পাঠকরা এসে হুমায়ুন আহমেদের বই বেশি চাচ্ছেন, কিনছেনও। এছাড়াও সাদাত হোসাইন, মৌরি মরিয়মের বইও ভালো বিক্রি হচ্ছে।

ঐতিহ্য প্রকাশের বিক্রয়কর্মী সালেহীন জিহাদ বলেন, মেলায় রোমান্টিক উপন্যাসের চাহিদা বেশি। এই ক্যাটাগরিতে হুমায়ুন আহমেদ এখনও অপ্রতিদ্বন্দ্বী। এরপর রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক উপন্যাসেরও চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে হুমায়ুন আজাদ, সৈয়দ শামসুল হক, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বইয়ের চাহিদা বেশি।

নতুন বই

বইমেলার ১৩তম দিনে নতুন বই এসেছে ১০৫টি। এরমধ্যে গল্প ১১, উপন্যাস ১৪, প্রবন্ধ ৭, কবিতা ৪১, গবেষণা ১, ছড়া ১, জীবনী ৫, রচনাবলি ৪, মুক্তিযুদ্ধ ৪, নাটক ১, বিজ্ঞান ২, ভ্রমণ ৩, ইতিহাস ১, চিকিৎসা ১, ধর্মীয় ১, অনুবাদ ২, সায়েন্স ফিকশন ২ ও

নিয়মিত আয়োজন

বিকাল চারটায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় আবদুল গাফফার চৌধুরী স্মরণে আলোচনা অনুষ্ঠান। এসময় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মফিদুল হক। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন হারিসুল হক এবং অপূর্ব শর্মা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আবেদ খান।

প্রাবন্ধিক বলেন, আবদুল গাফফার চৌধুরী দীর্ঘজীবী কর্মবীর ব্যক্তিত্ব। তার প্রধান পরিচয় সাংবাদিক ও লেখক। তার হাতে ছিল কলম যা অপূর্ব আলোর ঝলকানিতে জ্বলে উঠেছিল। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের ওপর তিনি এমন এক কবিতা লিখেছিলেন যা ছুঁয়ে গিয়েছিল জাতির অন্তর। আলতাফ মাহমুদের সুরে একুশের প্রভাতফেরিতে গীত হয় এখনও। সেই থেকে তার কলম নানা সন্ধিক্ষণে সমাজের চিন্তাস্রোতকে প্রভাবিত করেছে, মানুষকে আলোড়িত করেছে, বাঙালিকে করেছে জাতিচেতনায় সংহত।

আলোচকবৃন্দ বলেন, বাঙালির ভাষা আন্দোলন নিয়ে বহু গান রচিত হলেও সাংবাদিক, কবি, কলামিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরী রচিত 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটি সকল বাঙালির মনে স্থায়ী আসন করে নিয়েছে। পেশাগত জীবনে সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী প্রাণের আনন্দ খুঁজে পেয়েছিলেন লেখালেখিতে। আজীবন তিনি অসাম্প্রদায়িক চেতনা লালন করেছেন এবং অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে কলম ধরেছেন।

সভাপতির বক্তব্যে আবেদ খান বলেন, আবদুল গাফফার চৌধুরীর জীবন ও কর্ম অনেক বিস্তৃত। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের সাংবাদিকতা জগতের মহীরুহদের একজন। যে আদর্শ ও সৃজনশীলতা নিয়ে আবদুল গাফফার চৌধুরী সাংবাদিকতা করেছেন তা আমাদের জন্য আদর্শ হয়ে থাকবে।

লেখক বলছি

লেখক বলছি, অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন শাহনাজ মুন্নী, তসিকুল ইসলাম, দন্তস্য রওশন এবং মামুনুর রশীদ।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন শাহনাজ মুন্নী, আরভীন, হানিফ খান এবং জিলান। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী নাসিমা খান বকুল এবং অবন্ত রায়। এছাড়াও ছিল বর্ণা আলমগীরের সাংস্কৃতিক সংগঠন 'ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী', সৌন্দর্য প্রিয়দর্শিনী ঝুম্পার পরিচালনার সংগঠন 'জলতরঙ্গ ডান্স কোম্পানি'র পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন মো. খালেদ মাহমুদ মুন্না, অনন্যা আচার্য্য, কাজী মুয়িদ, শাহরিয়ার সিরাজ জয়, মো. রেজওয়ানুল হক, ফারহানা শিশির, শরণ বড়ুয়া এবং নাসিমা শাহীন ফ্যান্সী।

১৪তম দিনের সময়সূচি

১৪তম দিন মেলা শুরু হবে বিকাল ৩টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকাল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে বাংলা সাহিত্যের অনুবাদ এবং বিদেশি সাহিত্যের বাংলা অনুবাদ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন জিএইচ হাবীব এবং শামসুদ্দিন চৌধুরী। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন সম্পদ বড়ুয়া, রফিক-উম-মুনীর চৌধুরী, অধ্যাপক মো. আবু জাফর এবং মাহবুবা রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন ফকরুল আলম।