রাজধানীতে দুটি সড়কের নতুন নাম

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার দুটি সড়কের নতুন নামকরণ করা হয়েছে। এরমধ্যে একটি দোয়েল চত্বর থেকে শিক্ষা ভবন পর্যন্ত, সড়কটি  ভাষা শহীদ শফিউর রহমানের নামে নামকরণ করার প্রস্তাব পাস হয়েছে। আর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেট থেকে ডি.আই.টি এক্সটেনশন রোডে বের হওয়ার নির্মাণাধীন রাস্তাটি ‘খতিব অধ্যাপক মাওলানা মোহাম্মদ সালাহ্ উদ্দিন সড়ক’ নামে নামকরণ করা হয়েছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি এক সভায় রাস্তা দুটির নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব পাস হয়।

রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসের বাংলা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি নগর ভবনের তুরাগ হলে ডিএসসিসি’র আওতাধীন এলাকায় সড়ক, ভবন ও স্থাপনা নামকরণ সংক্রান্ত উপকমিটি সভায় এই প্রস্তাব পাস হয় বলে তিনি জানান।

আবু নাসের বলেন, ডিএসসিসির সড়ক, ভবন ও স্থাপনা নামকরণ সংক্রান্ত উপকমিটির সভাপতি ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে একটি সভায় রাস্তা দুটি নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব পাস হয়। ওইদিন থেকেই এটা কার্যকার হচ্ছে। তবে রাস্তা দুটিতে মেট্রোরেলের কাজ করায় এখনও নামফলক বসানোর কাজ শুরু হয়নি। কিছুদিনের মধ্যেই রাস্তাটির নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম ফলক বসানো হবে।

জানা গেছে, ‘ভাষা শহীদ শফিউর রহমান সড়ক’ নামকরণের প্রস্তাব করেন সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার জেনারেল গোলাম রব্বানী। আর ‘খতিব অধ্যাপক মাওলানা মোহাম্মদ সালাহ্ উদ্দিন সড়ক’ নামকরণ করার প্রস্তাব করেন ডিএসসিসির ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এনামুল হক।

হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রাব্বানী প্রস্তাব পত্রে উল্লেখ করেন, ভাষা শহীদ শফিউর রহমান কলকাতা গভর্নমেন্ট কমার্শিয়াল কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। তিনি ১৯৪৮ সালে বাবার সঙ্গে ঢাকায় আসেন ও তৎকালীন ঢাকা হাইকোর্টে হিসাবরক্ষণ বিভাগে যোগদান করেন। ১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার দিকে ঢাকার রঘুনাথ দাস লেনের বাসা থেকে সাইকেলে চড়ে অফিসের উদ্দেশে রওনা হন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নওয়াবপুর রোডে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আগের দিন পুলিশের গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। সেখানে পুলিশ গুলি চালায়। পুলিশের গুলি শফিউর রহমানের পিঠে লাগে। এরপর তাকে ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে নেওয়া হলে সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ২০০০ সালে শফিউর রহমানকে একুশে পদক (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়।

প্রস্তাব পত্র থেকে জানা যায়, বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সাবেক খতিব মরহুম প্রফেসর মাওলানা মোহাম্মদ সালাহ্ উদ্দিন দেশবরেণ্য আলেম ও ইসলামি চিন্তাবিধ ছিলেন। তার স্মৃতি সংরক্ষণ ও নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার লক্ষ্যে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেট থেকে ডি.আই.টি এক্সটেনশন রোডে বের হওয়ার নির্মাণাধীন রাস্তাটি ‘খতিব অধ্যাপক মাওলানা মোহাম্মদ সালাহ্ উদ্দিন সড়ক’ নামে নামকরণ করার জন্য অনুরোধ জানান হয়। পরে দুটি সুপারিশই গ্রহণ করা হয়।