তারকা হোটেলে কম মজুরিতে অবাক শ্রম সচিব, ‘ফেয়ার সিদ্ধান্তের’ পরামর্শ বিমান প্রতিমন্ত্রীর

দেশের অন্যতম তারকা হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারাগাঁও হোটেলের শ্রমিকরা ৩৫০০ টাকা মজুরিতে কাজ করেন শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহছানে এলাহী। তিনি বলেন, ‘এটা দুঃখজনক তারকা হোটেলের শ্রমিকরা মাত্র ৩৫০০ টাকা মজুরিতে কাজ করেন। অন্যদিকে শ্রমিকদের মজুরি প্রসঙ্গে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেছেন, ‘মালিক-শ্রমিক মিলে ফেয়ার সিদ্ধান্তে আসতে হবে।’

সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে সোনারগাঁও হোটেলের বল রুমে ‘সোনারগাঁও হোটেল শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন’ আয়োজিত ‘অভিষেক-২০২৩’ অনুষ্ঠানে তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে হোটেলটির শ্রমিক নেতারা মজুরি বৃদ্ধির দাবি জানান।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহছানে এলাহী বলেন, ‘আমি হোটেল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করবো, শ্রমিকদের যৌক্তিক মজুরি কাঠামো নির্ধারণ করবেন। তারকা হোটেলে শ্রমিকরা এতো কম মজুরিতে কাজ করেন, এটা দুঃখজনক।’

মো. এহছানে এলাহী বলেন, ‘শ্রমিকদের বিষয়ে সরকার আন্তরিক। আমরা যেখানেই অভিযোগ পাবো, শ্রম আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো।’

বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেছেন, ‘সোনারগাঁও হোটেল অনেক ঐতিহ্যের। তাই হোটেলের মর্যাদার সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিকের মর্যাদাও রক্ষা করতে হবে। মালিক-শ্রমিক মিলে ফেয়ার সিদ্ধান্তে আসতে হবে।’

মাহবুব আলী বলেন, ‘যে দেশের শ্রমিকদের অধিকার বেশি, সে দেশ ততো বেশি উন্নত। আমাদের দেশে শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। একটি প্রতিষ্ঠানের সফলতা অনেকাংশে নির্ভর করে প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের উপরে। যেহেতু এটা একটা ফাইভ স্টার হোটেল (সোনারগাঁও হোটেল)। এখানে সেবা নিতে আসে দেশ-বিদেশের অনেক অতিথি। তাদের সন্তুষ্টি প্রতিষ্ঠানের সমৃদ্ধির বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। এটাকে যদি অন্যান্য অফিসের মতো বলা হয়, তবে হবে না। পর্যটনকে সমৃদ্ধ করতে হলে পর্যটনের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত তাদের আচার ব্যবহার সুন্দর করতে হবে। সবকিছুর মধ্যে এমন কিছু থাকতে হবে, যেন একজন একবার আসার পর দ্বিতীয়বার আবার আসেন।’

পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘সোনারগাঁও হোটেলের কর্মচারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমি বলবো আমরা যেন মানসম্মত ইক্যুইটিতে আসতে পারি, সে বিষয়ে কাজ করতে পারি। এ বিষয়ে হোটেল মালিকদের পাশাপাশি শ্রমিকদেরও কাজ করতে হবে।’

সোনারগাঁও হোটেল কর্মচারীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা রিজনেবল হবেন এবং যারা ব্যবস্থাপনায় আছে, তাদের প্রতি অনুরোধ সবাইকে নিয়ে বসে যেটা ফেয়ার হয়, এরকম একটা সিদ্ধান্তে আমাদের আসতে হবে। আমাদের ভাবতে হবে, হোটেলের মর্যাদার সঙ্গেও যেন শ্রমিকের মর্যাদাও সমানভাবে থাকে।’

মজুরি বৃদ্ধির দাবি দ্রুত বাস্তবায়নে অনুরোধ জানান সোনারগাঁও হোটেল শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. আজম খান।

সোনারগাঁও হোটেল শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেলেও শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি পায়নি। অন কল বেসিসে যারা কাজ করেন, তারা দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরিতে কাজ করেন।’ তাদের মজুরিও বৃদ্ধির দাবি জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন ও জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা কে এম আযম খসরু প্রমুখ।