সম্পত্তিতে নারী-পুরুষের সমতা না থাকলে কখনও সমতা আসবে না

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে নারী-পুরুষের সমতা, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে নারীর অংশগ্রহণের পাশাপাশি অভিভাবক হিসেবে নারীকে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৩ উপলক্ষে ‘প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনীতে সম্ভাবনার বাংলাদেশ গড়ি, নারী-পুরুষের সমতা, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য বজায় রাখি’ প্রতিপাদ্য মূল রেখে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এই দাবি জানান।

অ্যাসোসিয়েশন অব ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিস বাংলাদেশ (এডাব), বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্র এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরামের (বিএমএসএফ) আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় এ সভা।

সভায় বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক নারীদের প্রযুক্তি ও সম্পত্তি নিয়ে বলেন, ৮ মার্চ উদযাপনের আজ ১১৩ বছর হয়ে গেল, কিন্তু এখনও আমরা বলছি যে আমরা অনেক কিছু পাইনি। নারীরা প্রযুক্তিতে অনেক পিছিয়ে আছে। নারীরা কিন্তু গণিত ভয় পায়, সায়েন্স ভয় পায়— এসব করা যাবে না। বিজ্ঞানে, প্রযুক্তিতে তাদের এগিয়ে আসতে হবে। প্রযুক্তি জানা থাকলে নারীরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, নারী-পুরুষের সমতা তখনই আসবে, যখন নারী-পুরুষের সম্পত্তির হিসাবে সমতা আসবে। তা না হলে কিছু এগোবে না। তাই নারী-পুরুষের সম্পদের অধিকার সমান করতে হবে।

অভিভাবক হিসেবে নারীদের স্বীকৃতি নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশে কিন্তু মা অভিভাবক হতে পারে না। মা কেন অভিভাবক হতে পারবে না? তাই বলছি আমাদের চিন্তার সমতা করা দরকার। আমরা সবাই মানুষ, যখন এ চিন্তা নারী-পুরুষ সবাই ভাবতে পারবে, তখনই সমাজ বদলাবে।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. মালেকা বানু বলেন, করোনার সময় কিন্তু প্রযুক্তি আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। এখন কিন্তু প্রযুক্তি ছাড়া আমরা কল্পনা করতে পারি না। আমাদের উন্নতি করতে গেলে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে এগিয়ে আসতে হবে। প্রযুক্তি সম্পর্কে এবং এর ব্যবহার আমাদের জানতে হবে।

তিনি আরও বলেন, নারীর শরীরের ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে। নারীর শরীর কীভাবে ব্যবহার হবে, সে সিদ্ধান্ত নারীকেই নিতে দিতে হবে। একই সঙ্গে সম-অধিকার সম্পর্কে কিন্তু স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে। দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার বা মন্ত্রী কিংবা পৃথিবীতে কতজন নারী রাষ্ট্রপ্রধান আছেন, তা দিয়ে সমতা বোঝা যাবে না। আমরা যদি নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করতে পারি, তবেই সমতা আসবে।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এডাবের সদস্য সচিব কাজী বেবী।

এডাবের চেয়ারপারসন আব্দুল মতিনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি এনামুল কবীর রুপম, গ্রাম কিকাশ সহায়ক সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মাসুদা ফারুক রত্না।