আটকের ৫ ঘণ্টা পর ২৪ চিকিৎসককে ‘সরি’ বলে ছেড়ে দিলো ডিবি

রাজধানীর বাটা সিগন্যাল এলাকায় ‘জিয়ান রেস্টুরেন্ট’ থেকে ২৪ চিকিৎসককে সোমবার (২০ মার্চ) বিকাল ৪টার দিকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে ডিবি অফিসে নিয়ে তাদের পাঁচ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর রাত ৯টার দিকে ‘সরি’ বলে ডাক্তারদের ছেড়ে দেওয়া হয়। চিকিৎসকদের কয়েকজন বাংলা ট্রিবিউনকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

২৪ চিকিৎসকের মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সকালে কথা হয়েছে বাংলা ট্রিবিউনের। তারা জানান, নিজেদের একটি ওষুধ কোম্পানির এজিএম অনুষ্ঠান করছিলেন ওই রেস্টুরেন্ট। এ সময় ডিবি পুলিশের একটি দল গিয়ে তাদের আটক করে। পরে ডিবি অফিসে নিয়ে যায়।

কথাবার্তার একপর্যায়ে চিকিৎসকদের গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, আমাদের কাছে তথ্য ছিল। এখানে অন্য একটি রাজনৈতিক দলের ডাক্তারদের মিটিং করার কথা ছিল। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই তুলে নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু আমরা বুঝতে পারিনি আপনারা ওষুধ কোম্পানির এজিএমে অংশ নিয়েছেন। এজন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। পরে নাম-ঠিকানা লিখে ও ছবি তুলে চিকিৎসকদের রাত ৯টার দিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ দিকে সারা দেশের ডাক্তারদের সংগঠন বাংলাদেশ ডাক্তার ফাউন্ডেশনের (বিডিএফ) পক্ষ থেকে ওই ঘটনায় ডিবি পুলিশের কাছ থেকে ব্যাখ্যা দাবি করা হয়েছে। তাদের ফেসবুক পেজে এ সংক্রান্ত পোস্ট দেওয়া হয়েছে।

বিডিএফ মহাসচিবের লেখা ওই পোস্টে বলা হয়, গতকাল রাতের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পাবলিক ব্যাখ্যা আমরা ডিবি পুলিশের কাছ থেকে আশা করছি। যেহেতু একটি পাবলিক স্থান থেকে ২৪ জন ডাক্তারকে ‘উঠিয়ে’ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, ওই ঘটনায় ডাক্তারদের মানহানি হওয়া ছাড়াও রেস্টুরেন্টের অন্য গেস্টদের মধ্যে ডাক্তার সম্বন্ধে আবারও নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে বলে আমার বিশ্বাস।

এতে আরও বলা হয়, ভুক্তভোগীরা তো আর জনে জনে উনাদের ইনোসেন্স বলে বেড়াবেন না। আশা করি কেন্দ্রীয় বিএমএ যথাযথ খোঁজ-খবর নিয়ে ডিবি পুলিশকে দিয়ে পাবলিক স্টেটমেন্ট ও পাবলিক অ্যাপোলজি দেওয়ানোর ব্যবস্থা করবেন। সেটা আগামী তিন দিনের মধ্যে না হলে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর ঘটনার যথাযথ এক্সপ্লানেশন চেয়ে স্মারকলিপি দেবো।

রেস্টুরেন্ট থেকে ডাক্তারদের তুলে নেওয়ার বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. হুমায়ুন কবীর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল জিয়ান রেস্টুরেন্টে একটি দলের ডাক্তারদের সংগঠন থেকে অন্য একটি ব্যানারে মিটিং করবে। আমরা সেই তথ্যের ভিত্তিতে ওই রেস্টুরেন্টে অভিযান চালাই। কিন্তু যাদের নিয়ে আসা হয়, তাদের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্যের সংগঠনের মিল না পাওয়ায় তাদের রাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।