বঙ্গবন্ধুর কারণে আজ আবহাওয়া বার্তা আগে পাই: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, ‘আগাম সতর্কবার্তার জন্য ১৯৭২ সালে ওয়ারলেস রাডারসহ ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিসি) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ কারণেই আজ আমরা বিভিন্ন আবহাওয়া বার্তা আগে থেকেই পেয়ে যাই। দুর্যোগ মোকাবিলায় সারা বিশ্বের কাছে এখন বাংলাদেশ রোল মডেল। অনেক দেশের তুলনায় আমাদের দেশের মৃত্যুর হার খুব কম।’

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) বিশ্ব আবহাওয়া দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরের মাল্টিপারপাস হলে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

এ সময় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. কামরুল হাসান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ প্রযুক্তিতে অনেকাংশেই এগিয়েছে। তবে অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়লে উন্নত বিশ্বের মতো এগিয়ে যেতে পারবো। সঠিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মানুষের জীবনের ঝুঁকির পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব।’

ডা. এনামুর বলেন, ‘যেকোনও দুর্যোগ দেখা দিলে আমরা যেমন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাস গ্রহণ করি, তেমনি আন্তর্জাতিক আবহাওয়ার পূর্বাভাসও গ্রহণ করি। ফলে কোনটা সঠিক, তা যাচাই-বাছাই করতে সহজ হয়। এতে আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারি। আমি বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরকে অনুরোধ করবো, আপনারা আন্তর্জাতিক সিগন্যালের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবেন। তাহলে আপনারাও দ্রুত পূর্বাভাসগুলো জানাতে পারবেন।’

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকার টেকসই লক্ষ্যমাত্রা উন্নয়নে নিরলস পরিশ্রম করে যাবে। জলবায়ু পরিবর্তন ও যেকোনও দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা সর্বত্র প্রস্তুত রয়েছি।’

সভাপতির বক্তব্যে আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, ‘আবহাওয়া অধিদফতর যেকোনও দুর্যোগ পরিস্থিতিতে সর্বদা প্রস্তুত থাকে। কখন কী অবস্থা হতে যাচ্ছে, তার পূর্বাভাস দ্রুত মানুষের কাছে পৌঁছিয়ে থাকে। তবে আমাদের জনবল অনেক কম। নিয়োগ কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় মাত্র ৭ শতাধিক কর্মী সারা দেশে কাজ করেন। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি আমরা যেন দুর্যোগে দ্রুত ও সঠিক পূর্বাভাস দিতে পারি।’

আলোচনা সভা শেষে আবহাওয়া অধিদফতরের বিজ্ঞানীদের নিয়ে বৈজ্ঞানিক সেশন করা হয়। এরপর আবহাওয়া অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ে আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক প্রশ্নোত্তর পর্ব, যন্ত্রপাতি এবং তথ্যচিত্র ও ভিডিও প্রদর্শনী করা হয়।

এ ছাড়া ঢাকা, কক্সবাজার, খেপুপাড়া, রংপুর ও মৌলভীবাজারের অপারেশনাল ইউনিট ও রাডার স্টেশনগুলো জনসাধারণের প্রদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।

আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) জানায়, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে আবহাওয়া, পানি ও জলবায়ুর পরিবর্তন-সংক্রান্ত দুর্যোগের প্রভাবে মানুষের জীবন, সম্পদ ও ভৌত অবকাঠামো প্রভাবিত হয়ে থাকে। আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট দুর্যোগের প্রভাব মোকাবিলায় আবহাওয়া ও জলবায়ুর আগাম ও কার্যকর পূর্বাভাস, সতর্কতা সংকেত প্রদান, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন কার্যক্রম গ্রহণ এবং তথ্য ব্যবস্থাপনা বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

আইএসপিআর আরও জানায়, বিশ্বব্যাপী ক্রমাগত জলবায়ু পরিবর্তেনের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আবহাওয়া, জলবায়ু এবং পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে বিভিন্ন সতর্কতা ও সম্ভাব্য পদক্ষেপ গ্রহণ সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টিই হলো এ বছরের প্রতিপাদ্যের মূল উদ্দেশ্য।