আওয়ামী লীগ নেতা টিপু হত্যা

একবছরেও শেষ হয়নি মামলার তদন্ত

২০২২ সালের ২৪ মার্চ রাতে রাজধানীর শাহজাহানপুরে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা সামিয়া আফনান প্রীতি নামে এক কলেজছাত্রীও নিহত হন। এছাড়া গুলিবিদ্ধ হন টিপুর গাড়িচালক মুন্না।

ওইদিন রাতেই নিহত টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সংরক্ষিত কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে শাহজাহানপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়। পরবর্তীতে গ্রেফতার হয় মূল অভিযুক্ত, তার সহযোগী, পরিকল্পনাকারীসহ ২৫ জন। হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র, মোটরসাইকেলও উদ্ধার হয়েছে। ঘটনার এক বছর পূর্ণ হয়েছে আজ। এরপরও তদন্ত শেষ করতে পারছে না ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ডিবির পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার বলেন, 'আমার তদন্ত অব্যাহত আছে। তদন্ত প্রায় শেষের দিকে। তদন্ত শেষ হলেই আদালতে চার্জশিট দাখিল করবো।'

সর্বশেষ ২৭ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। এদিন তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী আগামী ১৬ এপ্রিল প্রতিবেদন দাখিলের নতুন দিন ধার্য করেন।

মামলার বাদী টিপুর স্ত্রী ফারহানা ইসলাম এজাহারে উল্লেখ করেন, আমার স্বামী জাহিদুল ইসলাম টিপু ১০ বছর ধরে বৃহত্তর মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পাশাপাশি মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সদস্যও ছিলেন। মতিঝিল কাঁচা বাজার এলাকায় গ্র্যান্ড সুলতান নামে আমাদের একটি রেস্টুরেন্টে আছে। আমার স্বামী রেস্টুরেন্ট দেখাশোনা করতেন। ১০ বছর ধরে বৃহত্তর মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন দলীয় কোন্দল ছিল। গত ৪-৫ দিন আগে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারী আমার স্বামীকে ফোনে হত্যার হুমকি দেয়।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ঘটনার দিন গাড়িচালক মনির হোসেন মুন্না মাইক্রোবাস নিয়ে হোটেলের উদ্দেশে রওনা হয়। মতিঝিল এজিবি কলোনির গ্র্যান্ড সুলতান নামে একটি রেস্টুরেন্ট কাজ শেষে বাসার উদ্দেশে যাওয়ার পথে রাত আনুমানিক সোয়া দশটার দিকে মানামা ভবনস্থ বাটার দোকানের সামনে অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারীরা শত্রুতার জের ধরে আমার স্বামীকে এলোপাতাড়ি গুলি করে। আমার স্বামীর গলার ডানপাশে, বুকের বামপাশে, বুকের বামপাশের বগলের কাছাকাছি, পেটের মধ্যে নাভির নিচে, বামকাঁধের ওপর, পিঠের বামপাশের মাঝামাঝি স্থানে, পিঠের বামপাশে কোমর বরাবর, পিঠের ডানপাশের কোমরের ওপর একাধিক স্থানে মারাত্মক জখম হয়।

এসময় দুষ্কৃতকারীদের আগ্নেয়াস্ত্রের এলোপাতাড়ি গুলিতে প্রীতি নামে এক পথচারী নিহত হয়। আহত হয় টিপুর চালক মনির হোসেন মুন্না।

মামলার বাদী ফারহানা ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এই মামলাটা ডিবি তদন্ত করছে। এটা খুব সেনসিটিভ মামলা, তাই দ্রুত প্রতিবেদন দেওয়া জরুরি। যাতে মামলার বিচার দ্রুত শুরু করা যায়।