র‌্যাবের হেফাজতে নারীর মৃত্যুতে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের উদ্বেগ

র‌্যাবের হেফাজতে নারীর মৃত্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। একইসঙ্গে দ্রুততার সঙ্গে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে মানবাধিকারের এই সংস্থাটি।

সোমবার (২৭ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নওগাঁয় র‍্যাবের হেফাজতে থাকা অবস্থায় সুলতানা জেসমিন (৪৫) নামে এক সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসকের বক্তব্য এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে সুষ্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হচ্ছে, তাকে আটক ও জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে সংবিধান, বিদ্যমান আইন ও যথাযথ প্রক্রিয়ার ব্যত্যয় ঘটেছে। আসক এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিতের জোর দাবি জানাচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, নওগাঁ সদর উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহকারী সুলতানা জেসমিনকে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় থেকে গত ২২ মার্চ সকালে প্রতারণার অভিযোগে আটক করে র‍্যাব। ২৩ মার্চ বিকালে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা হয়েছে বলে জানা যায়। তার এ আটকের বিষয়ে স্থানীয় পুলিশকে র‌্যাব কোনও তথ্য জানায়নি। র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আটকের পরপর সুলতানা জেসমিন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে প্রথমে নওগাঁ হাসপাতাল এবং পরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

নির্যাতনের কারণে অসুস্থ হয়ে জেসমিনের মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবার দাবি করলেও র‍্যাব তা অস্বীকার করেছে। তবে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের চিকিৎসক জানিয়েছেন, হাসপাতালে ভর্তির সময় জেসমিনের মাথার ডানপাশে আঘাত ছিল। ব্রেনের ভেতর রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে সিটিস্ক্যান রিপোর্টে উঠে আসে।

এ ঘটনায় আসক  গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। আসক  মনে করে পরিবারের অভিযোগ গুরুতর। তবে এবারই প্রথম এমন অভিযোগ উঠলো তা নয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রায়ই নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ উঠছে। অভিযোগগুলোকে যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়ে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। আগের ঘটনাগুলোর আইনগত  প্রতিকার না পাওয়ার মধ্য দিয়ে বিচার না হওয়ার যে অপচর্চা বিদ্যমান রয়েছে, তা দূর করা জরুরি। তাই দ্রুততার সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে এ অভিযোগ খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা জরুরি।