‘শিলালিপি গবেষক ফতেহপুরীর মৃত্যু দেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য় অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন, প্রাচীন ফারসি, আববি ও উর্দু ভাষার সুপণ্ডিত মওলানা মুহাম্মদ নুরুদ্দিন ফতেহপুরীর মৃত্যু ঢাকার স্থাপত্য বিষয়ক গ্রন্থ প্রণয়ন কমিটির কাজে তো বটেই পুরো দেশের জন্যই অপূরণীয় ক্ষতি। এমন জ্ঞানসাধকরা যে বয়সেই মারা যান তা অকালমৃত্যু মনে হয়। তিনি হয়তো সশরীরে নেই, কিন্তু তার জ্ঞানসাধনা ও পরামর্শ সবসময় আমাদের সঙ্গে থাকবে।

শনিবার (১ এপ্রিল) রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘মওলানা মুহাম্মদ নুরুদ্দিন ফতেহপুরী স্মরণসভা, প্রামাণ্যচিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী’ শীর্ষক আলোচনায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকার স্থাপত্য বিষয়ক গ্রন্থ প্রণয়ন কমিটি এ আয়োজন করে।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক কামাল উদ্দিন, ঢাকার স্থাপত্য বিষয়ক গ্রন্থ প্রণয়ন কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবু সাইদ এম আহমেদ, বিশিষ্ট গবেষক ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের সাবেক পরিচালক মোশাররফ হোসেন, মওলানা ফতেহপুরীর ছোট ছেলে কাউসার বিন নুরউদ্দীন প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে সংগীত পরিবেশন করে শিল্পী সানোয়ারা জাহান নিতু।

বক্তারা বলেন, শিলালিপি গবেষক মওলানা মুহাম্মদ নুরুদ্দিন ফতেহপুরী জ্ঞানের চর্চা যেমন করেছেন– জ্ঞানকে সম্প্রসারণ করা, নতুন প্রজন্মের মাঝে জ্ঞান বিতরণ করার কাজেও তিনি একইভাবে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। প্রাচীন শিলালিপির পাঠোদ্ধারের মাধ্যমে ইতিহাস বিশেষত ঢাকার ইতিহাস পুনর্গঠনে তিনি রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। তিনি ছিলেন প্রকৃতই জ্ঞানতাপস।

তারা বলেন, ষাটের দশকে মওলানা ফতেহপুরী পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী মোগল আমলের নিদর্শক বড় কাটরা মাদ্রাসায় শিক্ষকতায় যোগ দেন এবং বড় ভাট জামে মসজিদের ইমামের দায়িত্ব নেন। বড় কাটরা ও বড় ভাট দুইটি মোগল স্থাপত্যে তার জীবনের সিংহভাগ সময় কেটেছে। আশির দশকে তিনি গ্রামেগঞ্জে ঘুরে প্রাচীন আমলের মসজিদ, মাজার, কাটরা ও ইমামপাড়াসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে শিলালিপি সংগ্রহ এবং পাঠোদ্ধার শুরু করেন।

২০১০ সালে ঢাকার স্থাপত্যবিষয়ক গ্রন্থ প্রণয়ন কমিটির সঙ্গে স্বেচ্ছাশ্রমে ঢাকার প্রাচীন শিলালিপির গ্রন্থনা কাজে যুক্ত হন শিলালিপি গবেষক মওলানা মুহাম্মদ নুরুদ্দিন ফতেহপুরী। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।